ভেনেজুয়েলা দিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির লাতিন আমেরিকা সফর শুরু

সংবাদ সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো। কারাকাস, ভেনেজুলেয়া, ১২ জুন
ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকা সফরে গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। বিরল এই কূটনৈতিক সফরের প্রথমে তিনি পা রেখেছেন ভেনেজুয়েলায়। গতকাল সোমবার দেশটির রাজধানী কারাকাসে পৌঁছে রাইসি বলেন, দুই ‘বন্ধু’ দেশের ‘শত্রুও অভিন্ন’।

ইরানের প্রেসিডেন্ট তাঁর এ সফরে কিউবা ও নিকারাগুয়া যাবেন। ইরান ও ভেনেজুয়েলার মতো এ দুটি দেশও যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধের আওতায় রয়েছে।

এর আগে ২০১৬ সালে ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি কিউবা ও ভেনেজুয়েলা সফর করেছিলেন। আর ২০০৭ সালে নিকারাগুয়া সফর করেছিলেন সেই সময়ের ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ।

কারাকাসে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে পাশে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বার্থ অভিন্ন, লক্ষ্য অভিন্ন এবং শত্রুও অভিন্ন।’

প্রেসিডেন্ট রাইসি আরও বলেন, ‘ইরান ও ভেনেজুয়েলা সাধারণ কূটনৈতিক নয় বরং কৌশলগত সম্পর্কে আবদ্ধ।’

‘যৌথভাবে আমরা অসাধ্য সাধন করব’—এমন দাবি করে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেন, নতুন বিশ্বব্যবস্থায় ইরান অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান শক্তি হিসেবে তার ভূমিকা পালন করছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির এ সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিধি বাড়ানো। তিনি জানান, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বছরে ৩০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য হচ্ছে। তাদের লক্ষ্য এটাকে দুই হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করা।

আরও পড়ুন

সংবাদ সম্মেলনে দুই নেতা ঘোষণা দেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে খনি—বিভিন্ন খাতে তাঁরা ২৫টি চুক্তি সই করেছেন। দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়টিও তাঁদের আলোচ্যসূচিতে ছিল।

এর আগে লাতিন আমেরিকার উদ্দেশে ইরান ছাড়ার আগে তেহরানে বার্তা সংস্থা ইরনাকে প্রেসিডেন্ট রাইসি বলেন, তাঁর এ সফরের উদ্দেশ্য ইরান, ভেনেজুয়েলা, নিকারাগুয়া ও কিউবার মধ্যে ‘অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা’ বাড়ানো।

গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল কারাকাসে। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে ওয়াশিংটন মার্কিন তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরনকে ভেনেজুয়েলায় ছয় মাসের জন্য কাজ করার অনুমোদন দেয়।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেলের খনি রয়েছে ভেনেজুয়েলায়। এরপরও দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে।

২০২২ সালের জুনে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইরান সফর করেন। সে সময় তেল, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতে দুই দেশের মধ্যে ২০ বছর মেয়াদি সহযোগিতার একটি চুক্তি সই করেন।