গভীর জঙ্গলে মায়া সভ্যতার আরেক প্রাচীন শহর
বিজ্ঞানীরা বলছেন, শহরটি প্রাচীন মায়া সভ্যতার সময়ের। হাজার বছরের বেশি সময় ধরে শহরটি মায়া জনগোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল।
মেক্সিকোর গভীর জঙ্গল। যেখানে সচরাচর মানুষের পা পড়ে না। সেখানেই সন্ধান পাওয়া গেছে প্রাচীন এক শহরের ধ্বংসাবশেষের। শহরটিতে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে পিরামিডের মতো ভবন ও পাথরের স্তম্ভসহ বিশাল সব স্থাপনা।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, শহরটি প্রাচীন মায়া সভ্যতার সময়ের। হাজার বছরের বেশি সময় ধরে শহরটি মায়া জনগোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ একটি কেন্দ্র ছিল।
শহরটির সন্ধান পেয়েছেন মেক্সিকোর জাতীয় নৃবিজ্ঞান ও ইতিহাস ইনস্টিটিউটের প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি দল। তাঁরা শহরটির নাম দিয়েছেন ‘ওকুমতান’। মায়া ভাষায় এর অর্থ ‘পাথরের স্তম্ভ’।
নৃবিজ্ঞান ও ইতিহাস ইনস্টিটিউট গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, এই শহর ৫০ হেক্টরের বেশি এলাকাজুড়ে রয়েছে। সেখানে ২৫০ থেকে ১ হাজার খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মায়া জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা বসবাস করতেন। এলাকাটি মেক্সিকোর কামপেচে প্রদেশের ‘বালামকু’ সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পড়েছে।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের দলটির নেতৃত্বে ছিলেন ইভান স্প্রাজক। ঘন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার হাঁটার পর শহরটি নজরে আসে তাঁদের। ইভান স্প্রাজক বলেন, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, শহরটি একটি উপদ্বীপের ওপর উঁচু ভূমিতে অবস্থিত। এর চারপাশে রয়েছে জলাভূমি। শহরটিতে বড় বেশ কয়েকটি ভবন রয়েছে। এ ছাড়া ১৫ মিটারের বেশি উঁচু কয়েকটি পিরামিড আকৃতি স্থাপনা রয়েছে।
শহরটি থেকে মৃৎশিল্পের কয়েকটি নিদর্শন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ইভান। কয়েকটি গর্তেরও সন্ধান মিলেছে, যেগুলো ৬০০ থেকে ৮০০ খ্রিষ্টাব্দের বলে পরীক্ষা করে জানা গেছে। ইভানের ভাষ্যমতে, শহরটিতে পাওয়া নমুনাগুলো আরও পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হলে বিস্তারিত ইতিহাস সামনে আসবে।
প্রাচীনকালে উত্তর ও লাতিন আমেরিকায় সবচেয়ে এগিয়ে ছিল মায়া সভ্যতা। এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল বর্তমান মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্য আমেরিকার উত্তরাঞ্চলে। অঞ্চলটি প্রায় যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের সমান। গভীর জঙ্গলে প্রায়ই মায়া সভ্যতার ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়।
এদিকে মেক্সিকোর নৃবিজ্ঞান ও ইতিহাস ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, তারা লা রিগুয়েনা নদী পর্যন্ত একই ধরনের আরও কিছু স্থাপনার সন্ধান পেয়েছে। এ নিয়ে ইভান স্প্রাজক বলেন, এলাকাটি বাজার অথবা বিভিন্ন ধর্মীয় আচার পালনের স্থান ছিল। তবে আরও গবেষণা করলে এই অঞ্চল ও বাসিন্দাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।