বিমানবাহী রণতরি মহাসাগরে ডুবিয়ে দিল ব্রাজিল

১৯৯৪ সালে আদ্রিয়াটিক সাগরে ‘সাও পাওলো’ নামের এই বিমানবাহী রণতরি। তখন এটি ছিল ফ্রান্সের নৌবহরে। নাম ফিল ‘ফোচ’
ছবি: এএফপি

আটলান্টিক মহাসাগরে নিজেদের পুরোনো একটি বিমানবাহিনী রণতরি ডুবিয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। অনেক পুরোনো হওয়ায় এটি ব্যবহার করছিল না ব্রাজিলের সামরিক বাহিনী। তবে এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল পরিবেশবিদ ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। তাদের আপত্তির কারণ, পুরোনো এই রণতরি বিষাক্ত বস্তুতে পূর্ণ।

ব্রাজিলের নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার বিকেলে ব্রাজিলের উপকূল থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে আটলান্টিক মহাসাগরে বিমানবাহী রণতরিটি ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেখানে রণতরিটি ডুবানো হয়েছে, সেখানে সমুদ্রের গড় গভীরতা ছিল ৫ হাজার মিটার বা ১৬ হাজার ফুট।’

ব্রাজিলের বিমানবাহী এই রণতরির নাম ছিল ‘সাও পাওলো’। ব্রাজিলের সরকার অবশ্য মহাসাগরে ডুবিয়ে দেওয়ার আগে রণতরিটির জাহাজভাঙা শিল্প–সংশ্লিষ্টদের এটি দিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু কোনো বন্দর কর্তৃপক্ষ রণতরিটি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ না করার পর মহাসাগরে ডুবিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে ব্রাজিলের প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা রণতরিটি সবচেয়ে নিরাপদ এলাকায় ডুবাতে চেয়েছিল। কিন্তু পরিবেশবাদীরা তাঁদের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এই রণতরিতে কয়েক টন ভারী ধাতু ও অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ আছে যা পানিতে প্রবেশ করে সামুদ্রিক খাদ্যশৃঙ্খলকে দূষিত করতে পারে।

এই রণতরি গত শতকের পঞ্চাশের দশকে ফ্রান্সে তৈরি। ফ্রান্সের নৌবাহিনী ৩৭ বছর এটি ব্যবহার করেছে। একে ২০ শতকের ‘নৌবাহিনীর ইতিহাসের সাক্ষী’ বলা হয়ে থাকে। ১৯৬০–এর দশকে এটি প্রথম ব্যবহার করে ফ্রান্স। সত্তর থেকে নব্বইয়ের দশকে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও সাবেক যুগোস্লাভিয়াতেও মোতায়েন ছিল।

২০০০ সালে ১ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারে এটি কিনে নেয় ব্রাজিল। এর দৈর্ঘ্য ২৬৬ মিটার। ২০০৫ সালে এক অগ্নিকাণ্ডের পর এটি ক্ষয়প্রাপ্ত হতে শুরু করে।