আমাজনে হারিয়ে যাওয়া সেই দুজনকে হত্যা করা হয়েছিল, জানাল ব্রাজিল পুলিশ

ব্রাজিলের পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ ব্রিটিশ সাংবাদিক ডম ফিলিপস এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্রুনো পেরেইরাকে গুলি করার কথা স্বীকার করেছেন এক সন্দেহভাজন ব্যক্তি। খবর বিবিসির।

ব্রাজিলে গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা এডুয়ার্ডো ফন্তেস বলেছেন, আমারিল্ডো দা কস্তা ডি অলিভেইরা নামের সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি তদন্তকারীদের এমন একটি স্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন, যেখানে মানুষের দেহাবশেষ পুঁতে রাখা হয়েছিল। ফন্তেস বলেন, পুলিশ লাশের পরিচয় নিশ্চিত করতে ইন্টারপোলের সঙ্গে কাজ করবে।

সাংবাদিক ফিলিপস (৫৭) ও পেরেইরা (৪১) ৫ জুন গহিন আমাজনে নিখোঁজ হন। তাঁদের নিখোঁজের ঘটনায় দুই ভাই আমারিল্ডো ও ওসেনি দা কস্তা ডি অলিভেইরাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা ফন্তেস সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথম সন্দেহভাজন’ আমারিল্ডো ‘পুরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে যেখানে তিনি মৃতদেহগুলো কবর দিয়েছিলেন, তাও জানিয়েছেন।’ তবে তাঁর ভাই এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।

পুলিশ বলেছে, এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও অনেককে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। খুনের কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টাও তারা করছে।

ব্রিটিশ সাংবাদিক ফিলিপসের স্ত্রী আলেসান্দ্রা সাম্পাইও একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যদিও আমরা এখনো নিশ্চিত হওয়ার জন্য জন্য অপেক্ষা করছি; পুলিশের এ তথ্য ফিলিপ ও পেরেইরার হদিস না জানার যন্ত্রণার একটা অবসান ঘটিয়েছে। এখন আমরা তাদের বাড়িতে নিয়ে আসতে পারি এবং ভালোবাসার সঙ্গে তাদের বিদায় জানাতে পারি।’

আলেসান্দ্রা সাম্পাইও তাঁর স্বামী ফিলিপস এবং পেরেইরার অনুসন্ধানে থাকা সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বিশেষ করে স্থানীয় নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী ‘ইউনিভাজা’ সম্প্রদায়ের মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এ ইউনিভাজা সম্প্রদায়ের মানুষ প্রথম এ দুজনের নিখোঁজ হওয়ার সময় সরকারি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সতর্ক করেছিল।

পুলিশ এ দুজনের হত্যার ঘটনা জানানোর পর ইউনিভাজা সম্প্রদায়ের মানুষ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, এ হত্যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। নিহত দুই ব্যক্তি মানবাধিকারকর্মী ছিলেন। তাঁরা এসব জাতিগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে কাজ করতেন। নিহত ফিলিপস এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্রাজিলে বসবাস করেছেন।

তিনি গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রদায়ক হিসেবেও কাজ করেন। আমাজন নিয়ে একটি বইয়ের কাজ করছিলেন তিনি।

নিহত আরেক ব্যক্তি পেরেইরা ব্রাজিল সরকারের ক্ষুদ্র জাতিসত্তাবিষয়ক সংস্থা ফুনাইয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি একেবারে বিচ্ছিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ। স্থানীয় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সংগঠনগুলো বলছে, এ অঞ্চলে অবৈধ মাছ ধরার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন ফিলিপস। আর এ জন্য তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।