আশঙ্কার চেয়ে কম ক্ষতি হয়েছে করোনায়: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো
ছবি: এএফপি

ব্রাজিলের অর্থনীতি গত বছরে আশঙ্কার চেয়ে কম সংকুচিত হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো বলেছেন, অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে দরিদ্রদের জন্য ব্রাজিল সরকারের গৃহীত জরুরি সাহায্য কর্মসূচিকে ধন্যবাদ দেওয়া যায়। গতকাল বুধবার তিনি এসব কথা বলেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত বছর ব্রাজিলের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমেছে ৪ দশমিক ১ শতাংশ। তবে বলসোনারো বলেছেন, করোনা মহামারির মধ্যে এ হার একেবারে খারাপ নয়। অনেকে এর চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির আশঙ্কা করেছিলেন।

সাংবাদিকদের সামনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মানুষ আশা করেছিল আমাদের জিডিপি ১০ শতাংশ কমে যাবে। কিন্তু আমাদের অর্থনীতির চাকা চালু করে রেখেছে সরকারের জরুরি সাহায্য।’

ব্রাজিল সরকার গত বছর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে ৫৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য দেয়। এতে জিডিপির সাড়ে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটে। এ ছাড়া দরিদ্রদের অর্থ সাহায্য করায় বলসোনারোর জনপ্রিয়তাও বেড়ে গেছে। তিনি আগামী বছর আবার ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করবেন।

বলসোনারো বলেন, তাঁর সরকার ব্রাজিলের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঠেকাতে সবকিছু করেছে।

অবশ্য ব্রাজিলের এই ডানপন্থী নেতা শুরুতে কোভিড-১৯কে গুরুত্ব দেননি। এর বাইরে মেয়রদের জারি করা লকডাউনের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, এতে চাকরির ক্ষতি হবে এবং ব্রাজিলবাসীর কাজ দরকার।

এদিকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো লকডাউনের বিরোধিতা করে বলেন, গভর্নরদের লকডাউনের কারণে মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। সম্প্রতি ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক সফরে তিনি আরও বলেন, মানুষ এখন আর ঘরে বসে থাকতে চান না। মানুষ তাঁদের কাজে ফিরতে চান।

এক বছর আগে করোনা মহামারির শুরুর পর থেকে দেশটিতে আড়াই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃতের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয়। ব্রাজিলে হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত সপ্তাহে দেশটিতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। অবস্থা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন ও হাসপাতালগুলো। বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নররা করোনা ঠেকাতে লকডাউনকেই অন্যতম উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু লকডাউনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন ব্রাজিলের ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। যেসব রাজ্য লকডাউন দিচ্ছে, তাদের কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া জরুরি মহামারি সহায়তা বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

জরুরি সাহায্য বাড়ানো প্রসঙ্গে বলসোনারো বলেছেন, তাঁর সরকারের অর্থ শেষ হয়ে গেছে এবং উচ্চ সুদের জাতীয় দেনা বাড়ছে। তবে তিনি আরও চার মাস এ সহায়তা বাড়ানোর পক্ষে প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন।