করোনায় নির্বাচন বলিভিয়ায়, মোরালেসের উত্তরসূরি বাছাইয়ের ভোট

আগামীকাল রোববার বলিভিয়ার ভোটাররা পরবর্তী নেতৃত্ব বেছে নিতে ভোট দেবেন।
ছবি: রয়টার্স

করোনা মহামারি ও কয়েক মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ভোট হতে যাচ্ছে বলিভিয়ায়। দেশটিতে আগামীকাল রোববার ভোটাররা পরবর্তী নেতৃত্ব বেছে নিতে ভোট দেবেন। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়ায় এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনে কঠোর লড়াই হবে।

জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক (লাতিন আমেরিকান এবং ক্যারিবীয় স্টাডিজ) জর্জে ডেরপিক বলেছেন, ‘আশঙ্কা রয়েছে যে এবারের নির্বাচনের ফলাফল যা–ই হোক না কেন, সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে এবং এর জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এটি খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হতে চলেছে।’

আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, এবারের ভোটের শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন মুভমেন্ট ফর সোশ্যালিজম পার্টির (এমএএস) প্রার্থী সাবেক অর্থমন্ত্রী লুইস আরস, সিটিজেন কমিউনিটি পার্টির নেতা কার্লোস মেসা এবং ক্রেমস পার্টির লুইস ফার্নান্দো কামাচো।

দেশটির আইন অনুযায়ী, প্রথম রাউন্ডের নির্বাচনে শীর্ষে থাকা প্রার্থী যদি মোট ভোটের ৪০ শতাংশ বা তার বেশি পান এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে তার ব্যবধান ১০ শতাংশ বা এর বেশি হয়, তাহলেই আর দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের প্রয়োজন পড়বে না।

গত বছরের অক্টোবরে নির্বাচন হয় বলিভিয়ায়। বিতর্কিত পুনর্নির্বাচনের কারণে বিক্ষোভের মুখে পড়েন ইভো মোরালেস। গত বছরের ২০ অক্টোবরের নির্বাচনে ‘সুস্পষ্ট কারচুপি’র প্রমাণ পাওয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের আহ্বান জানান। পরে তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় মেক্সিকো

এবারের ভোটের শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন মুভমেন্ট ফর সোশ্যালিজম পার্টির (এমএএস) প্রার্থী সাবেক অর্থমন্ত্রী লুইস আরস, সিটিজেন কমিউনিটি পার্টির নেতা কার্লোস মেসা এবং ক্রেমস পার্টির লুইস ফার্নান্দো কামাচো।
ছবি: রয়টার্স

নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে ইভো মোরালেস পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন—এমন অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু হয় দেশটিতে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী প্রথমে তাঁর প্রতি অনুগত থাকলেও পরে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে মোরালেস পদত্যাগের ঘোষণা দেন। অভিযোগ করেছেন, তিনি ‘অভ্যুত্থানের’ শিকার এবং তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মোরালেস বলেন, ‘দেশ ও জাতির স্বার্থে আমি প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’ তাঁর এ ঘোষণার পরপরই তাঁর প্রশাসনের অনেক মন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।

মোরালেস ২০০৬ সালে প্রথম আদিবাসী হিসেবে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। গত বছরের ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি সামান্য ভোটের ব্যবধানে চতুর্থ মেয়াদে বিজয়ী হওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু এ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠলে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দানা বাঁধে। বিক্ষোভে তিনজন নিহত ও কয়েক শ মানুষ আহত হয়।