বলসোনারোর অভিশংসনের দাবিতে ব্রাজিলে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

ব্রাজিলের ৪০০টি শহরে বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে।ছবি: রয়টার্স

ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর অভিশংসনের দাবিতে স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক হাজার মানুষ। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশটিতে ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য বলসোনারোর উদাসীনতাকে দায়ী করা হয়। ব্রাজিলের ৪০০টি শহরে এই বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে। খবর এএফপির।

বামপন্থী রাজনৈতিক দল, শ্রমিক ইউনিয়ন ও সামাজিক গোষ্ঠীর ডাকে চতুর্থ সপ্তাহের মতো বিক্ষোভ চলছে ব্রাজিলে। বলসোনারোর বিরুদ্ধে টিকা কেনায় সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।

রিও ডি জেনিরোতে কয়েক হাজার মানুষ লাল পোশাক ও মাস্ক পরে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা এ সময় ‘কেউ আর কিছু নিতে পারবে না’, ‘দুর্নীতিবাজ বিদায় হও’ বলে স্লোগান দেন।

বিক্ষোভের আয়োজকেরা বলছেন, গণতন্ত্র রক্ষা ও ব্রাজিলের অধিবাসীদের জীবন রক্ষার জন্য বলসোনারোকে সরিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।

রিওসহ ব্রাজিলের অন্য শহরগুলোতে বিক্ষোভকারীরা দেরিতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু, বেকারত্বের উচ্চহারের জন্য বলসোনারোর সরকারকে দায়ী করেন। মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ও দরিদ্র জনগণের জন্য জরুরি ত্রাণের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।

লেইস ডি ওলিভিয়েরা নামের ৬৫ বছরের এক সমাজকর্মী এএফপিকে বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের লড়াই করা প্রয়োজন। এই সরকারের কাজে যারা হতাশ ও নিপীড়নের শিকার, তাদের সবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া উচিত।’

গতকাল বিকেল পর্যন্ত ব্রাজিলের ২৬ রাজ্যের ২০টিতে বলসোনারোবিরোধী বিক্ষোভ চলেছে। দেশটির গণমাধ্যমে বিক্ষোভের ছবি ও খবর প্রকাশিত হয়েছে।

আয়োজক সংস্থাগুলো বিক্ষোভে কত মানুষ অংশ নিয়েছেন, সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা দেয়নি। তবে ব্রাজিলের অন্যতম জনবহুল শহর সাও পাওলো ও রাজধানী ব্রাজিলিয়াতে বড় ধরনের বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে।

বলসোনারোর জনপ্রিয়তা ক্রমেই কমছে। জনমত জরিপে আগামী অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের বামপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভার কাছে বলসোনারো পরাজিত হতে পারেন বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।

গতকালের বিক্ষোভের পেছনে লুলা ডি সিলভার ওয়ার্কার্স পাটির বড় ভূমিকা রয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ব্রাজিলে প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার জনের প্রাণহানি হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যার দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই ব্রাজিলের অবস্থান।

গত ৩০ জুন কংগ্রেসে বিরোধীরা বলসোনারোর অভিশংসনরে দাবি উত্থাপন করেন। তবে স্পিকারসহ কংগ্রেসে বলসোনারোর পক্ষে যথেষ্ট সমর্থন থাকায় অভিশংসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।