মেক্সিকোয় রাশিয়ার স্পুটনিক–ভি টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন

করোনা টিকা
ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার তৈরি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা স্পুটনিক-ভি-এর জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে মেক্সিকো। মানবদেহে এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে ইতিবাচক ফলাফল জানার পর গতকাল মঙ্গলবার এটির জরুরি ব্যবহারের ওই অনুমোদন দেয় দেশটির কর্তৃপক্ষ। বিশ্বে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি মেক্সিকো। খবর এএফপির।

টিকা উৎপাদনকারী উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে করোনা টিকার সীমিত সরবরাহ পাওয়ার প্রেক্ষাপটে রুশ টিকা ব্যবহারের এই উদ্যোগ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোকে তাদের টিকাদান কর্মসূচি চালু রাখার চেষ্টা টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করবে।

মেক্সিকোর উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী হুগো লোপেজ-গেটেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কফপ্রাইস স্পুটনিক-ভি টিকার জরুরি ব্যবহার অনুমোদন দিয়েছে।’

এর আগে গত বছর ব্যাপক পরিসরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ) ছাড়াই রুশ টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিল মেক্সিকো।

স্পুটনিক-ভি টিকার তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন—এমন দুই হাজার লোকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এটির কার্যকারিতা নিয়ে চিকিৎসা সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে গতকাল একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলে এই ইঙ্গিত পাওয়া যায়, এটির দুই ডোজ কোভিড-১৯–এর বিরুদ্ধে ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপের পর গত সপ্তাহে বলেছিলেন, রাশিয়া তাঁর দেশকে ২ কোটি ৪০ লাখ ডোজ স্পুতনিক-৫ টিকা দিতে সম্মত হয়েছে।

মেক্সিকোয় করোনায় এখন পর্যন্ত নিশ্চিত সংক্রমণের শিকার হয়েছেন ১৮ লাখের বেশি মানুষ। মারা গেছেন প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার। মৃত মানুষের সংখ্যায় দেশটির অবস্থান এখন বিশ্বে তৃতীয়। তার ওপরে রয়েছে শুধু ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্র।

গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে গণহারে টিকা দেওয়া শুরু করেছে মেক্সিকো। তবে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও এটির জার্মান অংশীদার বায়োএনটেকের তৈরি টিকা ব্যবহার করেছে দেশটি। ইতিমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি টিকার অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে সেখানে। পাশাপাশি আর্জেন্টিনার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে টিকা তৈরি করার চুক্তি করেছে মেক্সিকো।

মেক্সিকো ছাড়াও এক ডজনের বেশি দেশ স্পুতনিক-৫ টিকা ব্যবহার করার অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে ভেনেজুয়েলা, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, আর্জেন্টিনা, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া ও পাকিস্তানের মতো দেশ রয়েছে।