৬০০ গ্যাং সদস্যকে ক্যামেরার সামনে আনল এল সালভাদর

এল সালভাদরে ৬০০–এর বেশি গ্যাং সদস্যকে ক্যামেরার সামনে হাজির করেছে দেশটির সরকার
ছবি: রয়টার্স

মধ্য আমেরিকার সবচেয়ে ছোট দেশ এল সালভাদরের বড় সমস্যা হলো ‘গ্যাং’ সংস্কৃতি। দেশটির প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে ‘গ্যাং’ সমস্যা সমাধানে বিশেষ নীতি নিয়ে কাজ করছেন। সহিংস অপরাধ কমানোর পদক্ষেপ দেখাতে গতকাল শনিবার হাতকড়া পরানো কয়েক শ গ্যাং সদস্যকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। এসব গ্যাং সদস্যের বিরুদ্ধে সহিংস অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত শুক্রবার এল সালভাদর সরকার দেশটির মারা সালভাতরুচা (এমএস-১৩) গ্যাং এবং এর প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যারিও ১৮ গ্যাংয়ের ৬০০ সদস্যকে আটকের ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য নিয়ে সপ্তাহব্যাপী অভিযান পরিচালনা করা হয়।

গতকাল যেসব গ্যাং সদস্যকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, মানব পাচারসহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। গ্যাং সদস্যদের আটকের পর তাদের সাংবাদিকদের সামনে আনা দেশটির প্রচলিত একটি কৌশল।

গত এপ্রিল মাসে করোনা মহামারির মধ্যেও অর্ধনগ্ন কয়েক শ গ্যাং সদস্যকে একত্রে দাঁড় করিয়ে ছবি তোলা হয়। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অধিকারকর্মীরা এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ওই সময় সহিংসতা ছড়ানোর জন্য গ্যাংয়ের সদস্যদের শাস্তি দিয়েছিল দেশটি।

দেশটির নিরাপত্তামন্ত্রী রোজেলিও রিভাস নতুন করে আটক করা অধিকাংশ গ্যাং সদস্যকে সন্ত্রাসী হিসেবে বর্ণনা করেন। তাদের সেনা–পরিবেষ্টিত একটি খোলা প্লাজায় জড়ো করা হয়। সেখানে সব বন্দীকে মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা যায়। কারও মুখে উলকি ছিল। সবাই নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল।

দেশটির সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এ বছর দেশটিতে হত্যার পরিমাণ প্রায় অর্ধেক কমেছে। এর পেছনে রাস্তায় ও জেলখানায় অধিক সেনা ও পুলিশ মোতায়েনের বিষয়টি কাজ করেছে বলে যুক্তি দিয়েছেন নায়িব বুকেলে।

প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলের সরকার সহিংসতা হ্রাস এবং নির্বাচনের সময় সমর্থন দেওয়ার বিনিময়ে কারাগারে বন্দী গ্যাং লিডারদের সমর্থন দিয়েছে বলে অভিযোগ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে অনলাইন পত্রিকা এল ফারো।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এল সালভাদরের ডিরেক্টর অব প্রিজনস অসিরিস লুনা মেজা এ ধরনের কোনো চুক্তির বিষয়টি অস্বীকার করেন।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি খুনের ঘটনা ঘটা দেশগুলোর মধ্যে এল সালভাদর একটি। এগুলোর বেশির ভাগই গ্যাং-সংক্রান্ত। তবে এ বছরের শুরুতে দেশটিতে ২০১৯ সালের তুলনায় খুনের ঘটনা ৬২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে যায়। প্রেসিডেন্ট বুকেলে ২০১৯ সালের জুনে ক্ষমতা নেওয়ার পর খুনের ঘটনা কমে গেছে বলে কৃতিত্ব দাবি করেন।

এল সালভাদরে অপরাধ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন বুকেলে। তিনি ক্ষমতায় আসার পর টানা ৩০ দিন দেশটিতে কোনো খুনের ঘটনা ঘটেনি। তিনি ওই সময় টুইটারে দিনগুলো উদ্‌যাপন করেন।