আত্মহত্যা করলেন ম্যাক্যাফি অ্যান্টি ভাইরাসের নির্মাতা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও ম্যাক্যাফি অ্যান্টি ভাইরাসের নির্মাতা জন ম্যাক্যাফি কারাগারে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার স্পেনের একটি কারাগারে আত্মহত্যা করেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, কর ফাঁকির মামলায় স্পেনের আদালত তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার অনুমোদন দেওয়ার পর আত্মহত্যা করেন তিনি।
ম্যাক্যাফি ১৯৮০-এর দশকে নিজ নামে ‘ম্যাক্যাফি’ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর ২০১১ সালে আরেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইনটেলের কাছে ম্যাক্যাফি বিক্রি করেন তিনি। এরপর থেকে তিনি আর কোনো ব্যবসায় জড়াননি।
যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী খামখেয়ালি আচরণের জন্য পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারে কিউবাকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন ম্যাক্যাফি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে কর ফাঁকি দিয়েছেন, এ কথা নিজেই স্বীকার করেছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে তিনি বলেছিলেন, আদর্শিক কারণে আট বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে কর দেন না তিনি। এরপর বিচার থেকে বাঁচতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়েন তিনি। সেই থেকে একটি বিলাসবহুল তরীতেই জীবন-যাপন করছিলেন ম্যাক্যাফি। তাঁর সঙ্গে থাকতেন স্ত্রী জেনিস ম্যাক্যাফি, দুজন নিরাপত্তা প্রহরী, সাতজন কর্মী ও তার চারটি কুকুর।
সিবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের টেনিসি অঙ্গরাজ্যে ম্যাক্যাফির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা হয়। এ ছাড়া নিউইয়র্কে তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয় ক্রিপ্টোকরেন্সি সংক্রান্ত প্রতারণার একটি অভিযোগ।
গত বছরের অক্টোবরে স্পেনের বার্সেলোনা বিমানবন্দরে ম্যাক্যাফিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তাঁর বিচার চলছিল স্পেনের আদালতে। বুধবার স্পেনের হাইকোর্টের জানান, তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এরপর তিনি আত্মহত্যা করেছেন কি না বা কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন তার তদন্ত করছে স্পেনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
মৃত্যুর পর ম্যাক্যাফির আইনজীবী জাভিয়ার ভিল্লালবা বলেন, ম্যাক্যাফিকে কারাগারে আটকে রাখার কোনো কারণ ছিল না। স্পেনের নিষ্ঠুর ব্যবস্থার শিকার হয়েছেন তিনি।
এর আগে গত মাসে স্পেনে আদালতে শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন ম্যাক্যাফি। ওই সময় তিনি আদালতকে বলেন, তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে দোষী প্রমাণিত হন তবে তাঁকে বাকি জীবন কারাগারেই থাকতে হবে।
ম্যাক্যাফি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে অবিচার হচ্ছে। আমি আশা করছি, স্পেনের আদালত এটা দেখবেন। যুক্তরাষ্ট্র আমাকে ব্যবহার করে একটি উদাহরণ তৈরি করতে চায়।’