উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা

উত্তর কোরিয়া দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি জোরেশোরে এগিয়ে নিচ্ছে
ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বৃহস্পতিবার পিয়ংইয়ং আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালানোর পর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। খবর এএফপির।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার অধীনে আসা ব্যক্তি ও সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ‘উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে স্পর্শকাতর তথ্য সরবরাহের অভিযোগ’ রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ডিপিআরকে (উত্তর কোরিয়া) এর ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি উন্নয়নের সামর্থ্যে লাগাম টানতে চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং উদ্বেগজনক কর্মসূচি ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ব মঞ্চে রাশিয়ার যে নেতিবাচক ভূমিকা, সেটাকেই তারা তুলে ধরছে।

নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনায় তাৎক্ষণিক উষ্মা প্রকাশ করে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ বলেন, ধারাবাহিক এসব অবরোধ আরোপের লক্ষ্য অর্জিত হবে না।

২০১৭ সালের পর পিয়ংইয়ং সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে গতকাল। পরমাণু শক্তিধর দেশটির চালানো এই ক্ষেপণাস্ত্র আগের আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর চেয়ে বেশি ওপরে উঠেছে এবং বেশি দূরে গিয়ে তা আঘাত হেনেছে।
আজ শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দেশটির পরমাণু যুদ্ধ প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়াতে ‘নতুন ধরনের’ আইসিবিএম পরীক্ষা কিম জং–উন ব্যক্তিগতভাবে তদারক করেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জবাবে ওয়াশিংটন রুশ প্রতিষ্ঠান আরদিস গ্রুপ ও পিএফকে প্রোফপদশিপনিক এবং রুশ নাগরিক ইগোর আলেকসান্দ্রোভিচ মিচুরিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নাগরিক রি সুং চোল এবং প্রতিষ্ঠান সেকেন্ড একাডেমি অব ন্যাচারাল সায়েন্স ফরেন অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

এদিকে মিত্র সিউলের প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করতে গতকাল দিনের শেষ দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চুং ইউই–ইয়ংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

দুই নেতা বলেন, এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক প্রস্তাবের লঙ্ঘন। এতে উত্তর কোরিয়ার অবৈধ ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি যে দেশটির প্রতিবেশী ও বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি হুমকি, সেটাই প্রমাণিত হয়।

২০১৭ সালের পর আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা স্থগিত রেখেছিল উত্তর কোরিয়া। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার উচ্চপর্যায়ের একাধিক কূটনৈতিক বৈঠককে কেন্দ্র করে এ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা বন্ধ রাখে পিয়ংইয়ং। একই সময় থেকে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষাও বন্ধ রাখে।

তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সাতবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এক মাসে সর্বোচ্চসংখ্যকবার উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি। এর আগে ২০১৯ সালে এক মাসে সর্বোচ্চসংখ্যকবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতাপূর্ণ নীতিকে দায়ী করে আসছে উত্তর কোরিয়া।