কৃষ্ণাঙ্গ আহমদ আরবেরি হত্যায় তিনজনের যাবজ্জীবন

কৃষ্ণাঙ্গ আহমদ আরবেরিকে হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ করেন অনেকেই
ফাইল ছবি: রয়টার্স

আফ্রিকান আমেরিকান আহমদ আরবেরিকে হত্যার দায়ে তিনজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান বর্ণবাদ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার এই রায় দেন জর্জিয়ার একটি আদালত।

সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ট্রাভিস ম্যাকমাইকেল (৩৫), তাঁর বাবা গ্রেগরি ম্যাকমাইকেল (৬৬) ও তাঁদের প্রতিবেশী উইলিয়াম ব্রায়ান (৫২)। তাঁদের মধ্যে ট্রাভিস ও গ্রেগরি প্যারোলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন বলে জানিয়েছেন আদালত। হত্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থাকা ও তদন্তকারীদের সহায়তা করার জন্য ব্রায়ান চাইলে প্যারোল পাবেন।

জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ব্রান্সউইকে ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ট্রাভিস ও তাঁর বাবা নিজ বাড়ি থেকে কয়েক মিনিট দূরের সড়কে গুলি করে হত্যা করে ২৫ বছর বয়সী আহমদ আরবেরিকে। এ সময় জগিং করতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন আহমদ আরবেরি। উইলিয়াম ব্রায়ান এই ঘটনা ভিডিও করেন। পরে সেটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। গত নভেম্বরে ওই তিন ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।

রায় ঘোষণার সময় জর্জিয়া সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক টিমোথি ওয়ালসলে বলেন, ‘এটা ভিন্ন মাত্রার একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। তরুণ আহমদ আরবেরি দৌড়ানোর জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে হত্যার শিকার হয়েছেন। অভিযুক্তরা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন।’

আদালতে রায় ঘোষণার আগে আহমদ আরবেরির মা ওয়ান্ডা কুপার-জোনস সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা ভুল নয় বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। অভিযুক্তরা বর্ণের পার্থক্যের জন্য তাদের সমাজে আমার ছেলেকে দেখতে চায়নি। তাই তাদের কঠোর সাজা প্রাপ্য।’

কৃষ্ণাঙ্গ আহমদ আরবেরিকে হত্যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়, যা বিক্ষোভে রূপ নেয় মে মাসে। ওই সময় মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিসে পুলিশের হাতে নিহত হন কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড (৪৬)।

এই হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ ছড়ায়। গত বছরের জুনে ডেরেক চৌভিন নামে মার্কিন পুলিশের এক শ্বেতাঙ্গ কর্মকর্তাকে ফ্লয়েড হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। পরে তাঁকে সাড়ে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।