চুলের জন্য বৈষম্য নয়!

চুল। ফাইল ছবি
চুল। ফাইল ছবি

টেকো চুলের জন্য বিব্রত হয়েছেন—এমন লোকের অভাব আমাদের দেশে নেই। তবে কোঁকড়া চুল বা চুলে বিনুনি বাঁধার জন্য বৈষম্যের ঘটনা ঘটেছে, এ কথা সম্ভবত আমাদের অভিজ্ঞতার বাইরে। কিন্তু আমেরিকায় কৃষ্ণকায় বা আফ্রিকান-আমেরিকানদের মধ্যে এটি প্রায় নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। নিউইয়র্ক শহরে নতুন আইন হয়েছে, যার অধীনে চুলের কারণে বৈষম্য করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

বিষয়টা মোটেই খাটো করে দেখার নয়। উঁচু করে বাঁধা চুল আফ্রো নামে পরিচিত। বিখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা অ্যাঞ্জেলো ডেভিসের কারণে এই চুল বিখ্যাত। তাঁর কারণে এ দেশে অনেককে চাকরি খোয়াতে হয়েছে। একই ঘটনা দড়ি পাকানোর মতো করে চুল বাঁধার ক্ষেত্রেও। এ রকম চুল বাঁধা ব্রেইড নামে পরিচিত। অনেকে নিজের চুলের সঙ্গে লম্বা নকল চুল লাগান, সেটাও বিপত্তির কারণ। এ রকম চুলের কারণে আফ্রিকান-আমেরিকানদের মধ্যে অনেকে চাকরি খোয়ানো ছাড়াও হরহামেশাই ঠাট্টা বা নিন্দাসূচক মন্তব্যের শিকার হয়েছেন।

নিউইয়র্ক শহরের মানবাধিকার কমিশন বলেছে, চুল বাঁধার কারণে চাকরি যাওয়া বা কটূক্তির শিকার হওয়া মানুষের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। নতুন যে নির্দেশ তারা জারি করেছে, তার আওতায় চুলের কারণে কারও চাকরি গেলে বা কোনো রকম বৈষম্যের শিকার হলে, তিনি আদালতের আশ্রয় নিতে পারবেন।

চুল যেমনই হোক, কোঁকড়া বা সোজা, লম্বা বা ছোট, কালো বা রঙিন—এর কোনোটাই চাকরি পাওয়ার বা খোয়ানোর মানদণ্ড হতে পারে না বলে জানিয়েছে কমিশন। অপরাধ প্রমাণ হলে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

আপাতত শুধু নিউইয়র্ক শহরে এই আইন প্রয়োগযোগ্য হবে। তবে আইনটি বেশ সমাদৃত হচ্ছে। এতে অনুমান করা যায়, আফ্রিকান-আমেরিকান সংখ্যাগুরু অন্যান্য শহরেও খুব শিগগির হয়তো এই আইন সম্প্রসারিত হবে। মার্কিন সেনাবাহিনীতেও অনুরূপ একটি আইন চালু রয়েছে।