জ্যাকসন হাইটসে মাসব্যাপী বিপাশার চিত্রপ্রদর্শনী

জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াতের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী চলছে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের কাছে জনপ্রিয় যে কয়টি জায়গা আছে, তার মধ্যে জ্যাকসন হাইটস অন্যতম। তার মধ্যে ব্যস্ততম রাস্তা হলো ৭৪ নম্বর স্ট্রিট। সেখানে নতুন একটা আর্ট গ্যালারি হয়েছে প্রিমাভেরার উদ্যোগে। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে এই গ্যালারিতে রাখা হয়েছে বিপাশা হায়াতের আঁকা ২৪টি চিত্রকর্ম। অভিনেত্রী হিসেবে খ্যাতি থাকলেও তিনি জানালেন, প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে চিত্রকলা তাঁর সবচেয়ে প্রিয়। এটি অনেকটা তাঁর ধ্যানের মতো। এখানে তিনি নিজেকে খুঁজে পান।

টেলিফোনে কথা হলো বিপাশার সঙ্গে। টেনেসি অঙ্গরাজ্যে এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছেন। চলতি মাসের শেষে নিউইয়র্কে আসবেন।

আপনার চিত্রকর্ম প্রদর্শনী চলছে জ্যাকসন হাইটসে। কেমন লাগছে—এমন প্রশ্নে বিপাশা বলেন,‘আমি খুবই এক্সাসাইটেড, জ্যাকসন হাইটসে একটা আর্ট গ্যালারি হয়েছে যেখানে বাংলাদেশি চিত্র শিল্পীদের চিত্রকর্ম জায়গা পাবে। কারণ, জায়গাটা বাঙালিদের প্রাণকেন্দ্র। এ রকম জায়গাতে একটা আর্ট গ্যালারি রাখা দরকার ছিল। তাই, প্রিমাভেরাকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই। দর্শকদের সঙ্গে শিল্পীদের কথোপকথনে সেটা এখন আরও কার্যকর হবে।’

বিপাশা হায়াতের এই সিরিজের নাম রাখা হয়েছে ‘ইনসাইডার’। শিল্পীর ভাষায়, ‘আমি আসলে ছবি আঁকি না, প্রকাশ করি। আমি ছবির মাধ্যমে আমার ভেতরের ভাবনাগুলোকে দৃশ্যমান করার চেষ্টা করি। আমি মনে করি, আমরা যখন কথা বলি তার চেয়ে বেশি কথা বলি যখন কিছু বলি না। আমার কাছের মানুষেরা জানেন, আমি যখন ছবি আঁকি তখন আমাকে চোখ বন্ধ করে ভাবতে হয়। ওই মুহূর্তে আমার ভেতরে যে ভাবনা চলে, সেটাকেই আমি ক্যানভাসে আনার চেষ্টা করি। তাই, এবারের ছবিতে যেমন রং পাওয়া যাবে তেমনভাবে বৈরী সময়ের সঙ্গে যুদ্ধটাও পাওয়া যাবে। কিছু ছবি আছে, যেখানে আমি এই পৃথিবীর প্রাচীনতম মানুষদের ভাষা আবিষ্কারের চেষ্টা করেছি।’

বিপাশা হায়াতের বর্তমান ব্যস্ততা নাটক লেখা, ছবি আঁকা ও পড়াশোনা নিয়ে। বললেন, ‘রোমান এম্পায়ারের আগে যে সভ্যতার উত্থান-পতন, তার সঙ্গে ধর্মের যে প্রভাব এবং সংমিশ্রণ সেটা নিয়ে পড়ার চেষ্টা করেছি। এখান থেকে নিজেকে ও নিজের কাজগুলোকে আবিষ্কারের চেষ্টা করছি।’

সামনের পরিকল্পনা জানাতে বিপাশা বলেন, ‘এখন তো আসলে বেশির ভাগ পরিকল্পনাই থাকে সন্তানদের কেন্দ্র করে। এনসিয়েন্ট সোসাইটির গতি প্রকৃতি কী করে আমার কাজে আনতে পারি, সেটি নিয়ে গবেষণা করার পরিকল্পনা আছে। যেকোনো সভ্যতার উত্থানের পেছনে কিন্তু আরেকটি সভ্যতার পতনের ধারাবাহিকতা থাকে। এটা যে কত বেদনার, ভেতরে না ঢুকলে বোঝা যায় না। প্রত্যেকের সেটা জানা জরুরি। ভবিষ্যতে এ নিয়ে কাজ করতে চাই।’

এর আগে ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২০ সালের মে পর্যন্ত বিপাশা হায়াতের একক চিত্রকর্ম হয়েছিল ম্যানহাটনের নিউইয়র্ক ডিজাইন সেন্টারের ট্রান্সফর্ম গ্যালারিতে।