ট্রাম্পের ভিত্তিহীন অভিযোগ খাটো করছে যুক্তরাষ্ট্রকে

ডোনাল্ড ট্রাম্প

বুধবার সাতসকালে আইভরিকোস্টে মার্কিন দূতাবাস থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়। তাতে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর নেতাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও আইনের শাসনের প্রতি প্রতিশ্রুতি দেখানোর আহ্বান জানানো হয়।

এটা একধরনের মেকি ঘোষণা, যা মার্কিন কূটনীতিকেরা সব সময়ই বিশ্বজুড়ে নির্বাচনী ইস্যুতে দিয়ে থাকেন। এমন ঘোষণা তাঁরা বিশেষত সেসব দেশে দিয়ে থাকেন, যেখানে গণতন্ত্র পুরোপুরি নিরাপদ নয়। কিন্তু এ ঘোষণা কিছুটা হলেও (এই ঘোষণার) কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নানান মন্তব্যে খাটো হয়েছে।

হোয়াইট হাউসে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে একহাত নেন। বলেন, সব ভোট গণনা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে ভিত্তিহীনভাবে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ করেন। এ নিয়ে একের পর এক টুইট করেন তিনি। অবস্থা এমন হয়ে ওঠে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার তাঁর কয়েকটি পোস্টের সঙ্গে ‘বিতর্কিত’ বা ‘বিভ্রান্তিকর’ সতর্কতামূলক বার্তা জুড়ে দিতে বাধ্য হয়।

এ বছরের মার্কিন নির্বাচন নিয়ে দৃষ্টিকটু বিতর্ক ও কুৎসিত প্রচারণা এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে দেশের বাইরে তার অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। উপরন্তু এ নির্বাচনকে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে উপস্থাপনের মার্কিন নেতাদের যে চেষ্টা, তা আহত করেছে অনেককে। ট্রাম্পের বিরূপ মন্তব্যগুলো অনেক দেশই ভালোভাবে নেয়নি। দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচকেরা গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে ওয়াশিংটনের ভণ্ডামির অভিযোগ করে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে।

জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যান্নেগরেট ক্র্যাম্প-ক্যারেনবাউয়ার গত বুধবার সরকারি প্রচারমাধ্যম জেডডিএফকে বলেন, (নির্বাচন নিয়ে) যুক্তরাষ্ট্র ‘খুব বিস্ফোরক পরিস্থিতি’ ও এক সম্ভাব্য সংকটের মুখোমুখি। নির্বাচনের নিষ্পত্তি হয়নি...ভোট গণনা এখনো চলছে। এখনই ফলাফলের বৈধতা নিয়ে লড়াই শুরু হয়ে গেছে।

লেজেগোবরে অবস্থায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতা জেরেমি হান্ট বিবিসিকে বলেন, এই নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে যুক্তিতর্কের পাহাড় প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মতো নেতাদের মুখে হাসি ফোটাবে। তাঁরা জনগণকে বলবেন, ‘(নিজেদের দেশে) এমন কোনো গন্ডগোল না দেখে তোমরা কি খুশি নও?’ এটা নিশ্চিত বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে। হান্ট আরও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের যে সুনাম, তা এখানে সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।’