নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে ‘ই-পাসপোর্ট’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন ও নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা।
এ সময় ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, কনস্যুলেটে আগত সেবা প্রার্থী ছাড়াও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মো. মোকাব্বির হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান। এরপর সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব ও কনসাল জেনারেল কয়েকজন আবেদনকারীকে ই-পাসপোর্টের এনরোলমেন্ট স্লিপ হস্তান্তর করেন।
সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন বক্তব্যে পূর্বে প্রচলিত হাতে লেখা এবং মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের কিছু সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে বলেন, নতুন প্রচলিত ই-পাসপোর্ট বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির হওয়ায় এতে জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই। এ কারণে বহির্বিশ্বে এই পাসপোর্টধারীদের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ এখনো ই-পাসপোর্টের প্রচলন করতে পারেনি এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করেছে।
সচিব আরও উল্লেখ করেন, ৫ সেপ্টেম্বর বিদেশে বাংলাদেশের প্রথম মিশন হিসেবে বাংলাদেশ দূতাবাস বার্লিনে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশের দ্বিতীয় মিশন হিসেবে এবার নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেটে এই সেবা চালু করা হলো। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার ইতিমধ্যেই ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ই-গেট স্থাপন করেছে, যা যাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করবে।
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর এই ঐতিহাসিক ও আনন্দঘন মুহূর্তে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ই-পাসপোর্ট সেবার শুভ সূচনা করল। ই-পাসপোর্টের প্রচলন উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
কনসাল জেনারেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্বের ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি। তথ্যপ্রযুক্তিসহ আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি লাভ করেছে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ২২ জানুয়ারি ই-পাসপোর্টের উদ্বোধন করেন। এই পাসপোর্ট বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রযুক্তিনির্ভর একটি পাসপোর্ট। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট সেবা বিলম্বিত হয়েছে, তবে অচিরেই পাসপোর্ট–সংক্রান্ত সব ধরনের সেবা নাগরিকদের প্রদানের ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর।
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল নিউইয়র্ক থেকে ই-পাসপোর্ট সেবার জন্য https://www.epassport.gov.bd/landing লিংকে আবেদন ফরম পূরণ করে আবেদনপত্রের কপি (বারকোডসহ) এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ সরবরাহ করতে হবে।
নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেটে ই-পাসপোর্ট সেবার পাশাপাশি চলমান মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে।