নিউইয়র্ক নগর ছেড়ে আশপাশের রাজ্যে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা

করোনাভাইরাস
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরেই সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি মার্কিনের বসবাস। কিন্তু করোনা মহামারি শুরুর পর নিউইয়র্ক শহর ছেড়ে বাংলাদেশিদের অন্যত্র চলে যাওয়ার হার বাড়ছে। স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পছন্দের তালিকায় রয়েছে বাফেলো, মিশিগান, ফিলাডেলফিয়া, নিউজার্সি ও আলবেনি।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতি ছিল নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। দেশের অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের তুলনায় মৃত্যু ও সংক্রমণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই অঙ্গরাজ্য। ফলে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই এই অঙ্গরাজ্যের সবচেয়ে জনবহুল ও ব্যয়বহুল নগর নিউইয়র্ক থেকে মানুষের অন্যত্র স্থানান্তরের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আগের অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশিরাও দল বেঁধে নিউইয়র্ক শহর ছাড়ছে।

নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশিদের বড় একটি অংশ সাধারণত ডানকিন ডোনাটস নামক কফির দোকান, বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু করোনা মহামারি শুরুর পর অনেকেই বেকার হয়ে পড়ায় নিউইয়র্কের উচ্চ ব্যয়ের জীবন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। এ অবস্থায় অন্যত্র স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন অনেকে। অন্যত্র স্থানান্তরের ক্ষেত্রে তাঁরা সাধারত এমন সব শহর নির্বাচন করছেন, যেখানে ঘর-বাড়ি এবং জীবনযাত্রার মান সাধ্যের অনুকূলে।

করোনা মহামারি শুরুর পর মার্কিন সরকার নাগরিকদের বেকার ভাতা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণদান, বাড়ি ভাড়া না দেওয়ার পদক্ষেপসহ আরও নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে। বাংলাদেশি যেসব পরিবারে একই সঙ্গে ৩/৪ জন বা তার চেয়ে বেশি সদস্য সরকারের দেওয়া এই বেকার ভাতা পেয়েছেন, তারা এই সময়কালে বেশ অর্থ সঞ্চয় করতে সক্ষম হয়েছেন। বেকারভাতা থেকে প্রাপ্ত এই অর্থ দিয়ে অনেকে অন্য শহরে গিয়ে নগদ অর্থ দিয়ে বাড়ি কিনেছেন বলেও শোনা গেছে। আবার অনেক বাংলাদেশি কয়েক মাসের বাড়ি ভাড়া না দিয়ে ঠিকই অন্য শহরে গিয়ে নতুন বাড়ি কিনেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

কয়েক মাসের ভাড়া বকেয়া থাকায় অনেক বাংলাদেশি বাড়ির মালিককে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। আবার হঠাৎ করেই এত মানুষ অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়ায় অনেক বাসায় ভাড়াটিয়া পাওয়াও এখন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশিরা যেসব শহরে স্থানান্তরিত হচ্ছেন, সেখানে বাড়ি-ঘরের ব্যবসা জমে উঠেছে। বাফেলো, মিশিগান, ফিলাডেলফিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি রিয়েল এস্টেট কর্মীরা বলেন, বাংলাদেশিদের প্রতিনিয়ত স্থানান্তরের ফলে তারা খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন। এত বাংলাদেশি স্থানান্তরের ফলে সেসব শহরের অন্যান্য ব্যবসা যেমন—গ্রোসারি, রেস্টুরেন্ট, কর অফিস ইত্যাদির সংখ্যাও দিনে দিনে বাড়ছে। একদিকে নিউইয়র্ক নগর থেকে বাংলাদেশির সংখ্যা কমছে, অন্যদিকে অন্যান্য শহরে বাংলাদেশিদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠছে।