নির্বাচনের ফল পাল্টাতে ভিন্ন পথে হাঁটছেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। পেনসিলভানিয়া রাজ্যের ভোট গণনা স্থগিত রেখে রাজ্য আইনসভাকে ইলেকটোরাল কলেজ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

উইসকনসিন রাজ্যের জনবহুল এলাকাগুলোতে ভোট পুনর্গণনার জন্য ৩০ লাখ ডলার ফি জমা দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাস্থ্যসেবীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ট্রানজিশনে সহযোগিতা না পাওয়ায় দেশের ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় তাঁর প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন। এখনো নতুন নাগরিক প্রণোদনা আইন প্রণয়নে কংগ্রেস ব্যর্থ হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন জো বাইডেন। এ নিয়ে সিনেটর রিপাবলিকানদের তিনি দায়ী করেছেন।

দ্য জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সব রাজ্যের ভোটের সার্টিফাই করা ফলাফল পাওয়ার পর নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার কথা। এমন ঘোষণার পরই নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের কাছে ট্রানজিশনের জন্য ফেডারেল অর্থ উন্মুক্ত হয়ে থাকে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে এমন সার্টিফিকেশন শুরু হয়েছে। ভালো পরিস্থিতিতে এমন সার্টিফিকেশন ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ রয়েছে।

উইসকনসিন রাজ্যের নির্বাচনী আইনে ডাকযোগে পাওয়া ভোটের ব্যালট পেপার যথার্থ না হলে বাতিল হয়ে যেতে পারে। এ রাজ্যে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভোটের ব্যবধান ১ শতাংশের কম। রাজ্যের জনবহুল মিলওয়াকি এবং ডেইন কাউন্টি এলাকায় পাওয়া ভোট আবার গণনার আবেদন জানানো হয়েছে ট্রাম্প শিবির থেকে। রাজ্যের আইন অনুযায়ী, এমন ভোট গণনার জন্য ৩০ লাখ ডলারের ফি জমা দিয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।

এমন পুনর্গণনার মাধ্যমে জর্জিয়া ও উইসকনসিনে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্প শিবির এখনো আশাবাদী। পেনসিলভানিয়া রাজ্যের ভোট গণনা নিয়ে এখনো ট্রাম্পের মামলা চলমান। ১৮ নভেম্বর পেনসিলভানিয়ার মামলায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি সংশোধনী আবেদন জানিয়েছেন। আবেদনে রাজ্যের ভোট সার্টিফাই করার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।

পেনসিলভানিয়া রাজ্যের আইনসভায় রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। কোনো রাজ্যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোটের ফলাফল সার্টিফাই করতে সক্ষম না হলে, রাজ্যের আইনপ্রণেতাদের ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আছে। এমন ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আগে কখনো ঘটেনি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ পথেই হাঁটছেন বলে মনে হচ্ছে। সংকট সৃষ্টি করে ট্রাম্প কোনো কোনো রাজ্যের আইনসভা দিয়ে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট পাওয়ার ভাবনার মধ্যে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে জো বাইডেন রিপাবলিকান দলের নেতাদের ভূমিকা নিয়ে তাঁর হতাশার কথা জানিয়েছেন। ডেলওয়ারা রাজ্যে নিজের বাড়িতে অবস্থানরত জো বাইডেন স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। টিকা চলে আসার পর এর বিতরণই তাঁর প্রশাসনের প্রথম কর্মযজ্ঞ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। টিকা উৎপাদন, মজুত ও বিতরণ নিয়ে আগাম অবহিত থাকাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাইডেন বলেছেন, রিপাবলিকান দলের নেতারা ট্রাম্পকে বিব্রত না করার জন্যই হয়তো কিছু বলছেন না। এ পরিস্থিতি থাকবে না বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।