বিচার চান নিউইয়র্কের কবি-সাহিত্যিকেরা

মুশতাক আহমেদ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যু হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন নিউইয়র্কের লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতারা। তাঁরা মুশতাক আহমদের এমন মৃত্যুর ঘটনায় বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বরা হয়েছে, সরকার আইন করবে জনগণের স্বার্থে, সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার প্রয়োজনে। কিন্তু লক্ষ্য করা হচ্ছে, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ এমন কিছু আইন করেছে, যার অপপ্রয়োগ সমাজের মানুষকে নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এক সময় ৫৪ ধারায় মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছে। তার পরিবর্তনের দাবি উঠলে, সরকার ৫৭ ধারা এবং ৫৭ ধারার সংশোধন করে ডিজিটাল আইন করে। ডিজিটাল আইন করার সময় সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সমাজসচেতন ব্যক্তিরা সংশোধন বা বাতিলের দাবি তুলেছিলেন। সে সময় তা শোনা হয়নি। আমরা দেখছি, বাস্তবে এই আইনের মাধ্যমে তার অপব্যবহার করে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে। মুক্তমনা লেখক, কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিকদের ওপর প্রয়োগ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক লেখক ও সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হচ্ছে। তাঁদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তি আইনে লেখক মুশতাক আহমদ গ্রেপ্তার হয়ে জেলে ছিলেন। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ছয়বার জামিন চেয়েও জামিন দেওয়া হয়নি তাঁকে। সম্প্রতি জেলের অভ্যন্তরে বন্দী অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছে নির্যাতনের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জেল হলো নিরাপদ স্থান। সেখানে কীভাবে একজন লেখকের মৃত্যু হয়, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তদন্ত ও বিচারের দাবিতে সাধারণ মানুষ মাঠে নেমেছে। কিন্তু প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতন চালানো হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীরা মনে করি, অবিলম্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি আইন সংশোধন অথবা নির্যাতনমূলক ধারা বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন—সাপ্তাহিক আজকালের সম্পাদক মঞ্জুর আহমেদ, লেখক ও সাবেক টিভি প্রযোজক বেলাল বেগ, প্রবীণ সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী, সাপ্তাহিক প্রতিদিনের সম্পাদক লাবলু আনসার, সাপ্তাহিক নবযুগের সম্পাদক শাহাব উদ্দীন সাগর, প্রোগ্রেসিভ ফোরামের সভাপতি খুরশেদুল ইসলাম, সেক্রেটারি আলীম উদ্দীন, বাসদের নেতা সাহাবউদ্দীন, সুব্রত বিশ্বাস, কাশেম আলী, উদীচী যুক্তরাষ্ট্রের সহসভাপতি শরাফ সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন, প্রচার সম্পাদক আশীষ রায়, সভাপতি শামসাদ হোসাম, মহিলা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ সম্পাদক সুলেখা রায়, লেখক ও সাংবাদিক রওশন হক, লেখক ও সাংবাদিক মনিজা রহমান, বাসদের নেতা মোশারফ খান, এমাদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মুক্তাদির স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, সৈয়দ রেজাউল করিম প্রমুখ।