মার্কিন নির্বাচনের ফল নিয়ে মৃত্যুর হুমকি পর্যন্ত পান কর্মকর্তারা

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল দাঙ্গার ঘটনা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেস প্যানেলের শুনানি চলছে
ছবি: রয়টার্স

২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয়ের ফলাফল বাতিল করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা। এ কারণে পরিবারের সদস্যসহ তাঁরা মৃত্যুর হুমকি পর্যন্ত পান।

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল দাঙ্গার ঘটনা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেস প্যানেলের শুনানিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হামলার ঘটনা তদন্তে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে কংগ্রেসে গণশুনানি চলছে।

গতকাল মঙ্গলবার চতুর্থ গণশুনানিতে অ্যারিজোনা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার রাস্টি বোয়ার্স বলেন, নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া হয়রানি আজও চলছে।

জর্জিয়ার এক ভোট গণনাকারী বলেন, সুনির্দিষ্ট করে তাঁকে নিশানা করেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের নিশানা হওয়ার পর থেকে তিনি বাড়ির বাইরে যেতে ভয় পান।

২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন জয়ী হন। কিন্তু নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে পরাজয় মানতে অস্বীকৃতি জানান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

বাইডেনের জয়ের সত্যায়নে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বসে। সত্যায়নপ্রক্রিয়া ঠেকাতে ট্রাম্পের উসকানিতে তাঁর উগ্র সমর্থকেরা কংগ্রেস ভবনে (ক্যাপিটল হিল) সহিংস হামলা চালান। এতে পুলিশসহ কয়েকজন নিহত হন।
ক্ষমতা ধরে রাখতে ট্রাম্পের এসব তৎপরতাকে অভ্যুত্থান-প্রচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছে কংগ্রেস প্যানেল। কংগ্রেসের তদন্ত কমিটির তীব্র সমালোচনা করে আসছেন ট্রাম্প। ডেমোক্রেটিক নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।

গতকালের গণশুনানিতে কংগ্রেস প্যানেল অ্যারিজোনা ও জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বক্তব্য শোনেন।

উভয় অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পকে পরাজিত করেছেন বাইডেন। অবশ্য আগের নির্বাচনে উভয় অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন।

নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে অ্যারিজোনা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার বোয়ার্স বলেন, তাঁরা ২০ হাজারের বেশি ই-মেইল পেয়েছেন। হাজারো ভয়েস মেইল-টেক্সট পেয়েছেন। এর কারণে তাঁদের কাজ ব্যাহত হয়। তাঁদের যোগাযোগ ব্যাহত হয়।
বোয়ার্স বলেন, ‘এটি বিরক্তিকর ছিল।’
জর্জিয়ার নির্বাচনকর্মী শায়ে মস ও তাঁর মা রুবি ফ্রিম্যানের বক্তব্য শোনেন কংগ্রেস প্যানেল।
মস বলেন, রেকর্ড করা বার্তায় তাঁকে একজন পেশাদার ভোট-প্রতারক বলে অভিহিত করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, মা-মেয়ে জুটি ডেমোক্র্যাটদের সহায়তায় প্রতারণা করেছেন।
ফ্রিম্যান অশ্রুসিক্ত হয়ে বলেন, ‘আমি আমার নাম হারিয়েছি। আমার খ্যাতি হারিয়েছি। আমার নিরাপত্তাবোধ হারিয়ে ফেলেছি।’