শিক্ষাঋণ মওকুফে নতুন আইন হচ্ছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের অধীনে শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, তারা উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষাঋণ মওকুফকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন আইন জারি করতে যাচ্ছে।

সন্তানের পড়াশোনার ব্যয় বহন করার জন্য মা-বাবা মার্কিন সরকারের অধীনে ফেডারেল ঋণ নিয়ে থাকেন। কিন্তু প্যারেন্ট প্লাস ঋণ নামে পরিচিত ফেডারেল এ ঋণ নিয়ে অভিভাবকদের আরও ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে পড়তে হয় বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। এ কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন ফেডারেল শিক্ষাঋণ মওকুফ কর্মসূচির আওতায় যেসব ত্রুটি আছে তা নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

পড়াশোনার ব্যয় বহন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীরা ঋণ নিয়ে থাকেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই ঋণ পরিশোধ করতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে সুদ দিতে হয়। অনেক সময় অভিভাবকেরা সন্তানের পড়াশোনার ব্যয়বহুল খরচ বহন করার জন্য প্যারেন্ট প্লাস নামে ফেডারেল ঋণ নিয়ে থাকেন। কিন্তু সন্তানের স্নাতক ডিগ্রি শেষ করার জন্য চার বছরের প্রত্যেক সেমিস্টারে ঋণ নিতে নিতে এক সময় মাসিক কিস্তি পরিশোধের অর্থ বেড়ে যাওয়ায় চাপ বাড়তে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ে এ ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে উচ্চ সুদসহ এ ঋণের বকেয়া অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

স্নাতক শেষ করার জন্য শিক্ষার্থীরা যে ঋণ নিয়ে থাকেন তার প্রায় এক-চতুর্থাংশ প্যারেন্ট প্লাস ঋণের অন্তর্ভুক্ত। অনেক অভিভাবক এ ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না জেনেও সন্তানের পড়াশোনার খরচ চালাতে ঋণ নিয়ে থাকেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল শিক্ষাঋণের মধ্যে প্রায় ছয় শতাংশই প্যারেন্ট প্লাস ঋণের অন্তর্ভুক্ত। ২০১৬ সালে যেসব শিক্ষার্থীর অভিভাবক প্যারেন্ট প্লাস ঋণ নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৫৬ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ, ১৯ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ এবং ১৫ শতাংশ হিস্পানিক। অনেক অভিভাবক এ ঋণ প্রদান করতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে ঋণ মওকুফের আবেদন করেন।

শিক্ষা বিভাগ আরও জানিয়েছে, সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের ওপর করোনা মহামারির ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রভাব পড়েছে। করোনা মহামারিতে অনেক শিক্ষার্থীর জন্যই ঋণ নেওয়া এ অর্থ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারির জন্য কাজ হারিয়ে অনেক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক বেকার হয়ে পড়া কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাজেট কমিয়ে দেওয়া এবং করোনা মহামারির জন্য চাকরির বাজারে কিছুটা মন্দাবস্থা দেখা দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা ঋণ নেওয়া এ অর্থ পরিশোধ করার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন।

ফেডারেল শিক্ষা বিভাগের সভাপতি মিগুয়েল কার্ডোনা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘শিক্ষা বিভাগের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো এবং ঋণগ্রহীতাদের সহযোগিতা দেওয়া।’ তাই তিনি এ বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শিক্ষার্থীদের জন্য অহেতুক বাধা সৃষ্টি না করে বরং ঋণ প্রদান ও ঋণ মওকুফের প্রক্রিয়া সহজ করে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।