সাত বছর প্রেমের পর গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন বিল-মেলিন্ডা  

বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস
ছবি: এএফপি

মাইক্রোসফট করপোরেশনের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। এর এক যুগ পর আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ হয়েছিল তাঁদের। জানা যায়, ১৯৮৭ সালে চার চোখ প্রথম এক হয়েছিল। এরপর তাঁরা সাত বছর প্রেম করেছিলেন। অতঃপর বিয়ে। লিখছি বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটসের কথা।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিল গেটস ও মেলিন্ডার সম্পর্কের শুরুটা ছিল পেশাভিত্তিক। ১৯৮৭ সালে প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে মাইক্রোসফটে যোগ দিয়েছিলেন মেলিন্ডা। ওই বছরই প্রতিষ্ঠানের একটি আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা। এ ঘটনা ঘটেছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে।

এরপর দুজনের সামনে এগিয়ে যাওয়া। শুরু হয় তাঁদের তুমুল প্রেম। নেটফ্লিক্সে প্রচারিত এক তথ্যচিত্রে বিলগেটস বলেছেন, ‘আমরা একে অপরের খুব খেয়াল রাখতাম। এখানে দুটি সম্ভাবনা ছিল। হয় আমাদের প্রেমে বিচ্ছেদ হবে, নয়তো আমাদের বিয়ে করতে হবে।’

মেলিন্ডা বলেন, তিনি বিল গেটসকে একজন সুশৃঙ্খল মানুষ হিসেবে আবিষ্কার করেছিলেন। এমনকি তাঁকে বিয়ে করার পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিও দিয়েছিলেন বিল—এমনটাই জানিয়েছিলেন মেলিন্ডা।

আরও পড়ুন

এরপর প্রেম আরও গভীর হয়েছে। প্রেম শুরুর সাত বছর পর ১৯৯৪ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। হাওয়াই দ্বীপের লানাইয়ে হয়েছিল সেই আয়োজন। এরপর মাইক্রোসফট বড় হয়েছে। কিন্তু গত বছর তাঁরা এ প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরে যান, ব্যস্ত হয়ে পড়েন দাতব্যকাজে। এ জন্য ২০০০ সালেই, অর্থাৎ অবসরের আগেই গড়ে তুলেছিলেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে। বিশ্বজুড়ে সংক্রামক রোগব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই ও শিশুদের টিকাদানে উৎসাহিত করতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করছে এ ফাউন্ডেশন।

বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস এক অনুষ্ঠানে
ছবি: রয়টার্স

কিন্তু যে পথ বেঁধে দিয়েছিল বন্ধন, তার বিচ্ছেদের ঘোষণা এল আজ মঙ্গলবার। দুজনার দুটি পথ দুটি দিকে গেল বেঁকে। দীর্ঘ ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন বিল ও মেলিন্ডা। টুইটার বার্তায় তাঁরা এ ঘোষণা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বিশ্বের অন্যতম ধনী। তিন সন্তান রয়েছে তাঁদের। ফোর্বস সাময়িকীর তথ্যমতে, বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় বিল গেটস চতুর্থ অবস্থানে আছেন। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি বিশ্বের অন্যতম ধনী ওয়ারেন বাফেটের সঙ্গে ‘দ্য গিভিং প্লেজ’ উদ্যোগে জড়িত। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের ধনীদের সম্পদের একটি বড় অংশ দাতব্যকাজে লাগানো।

বিল ও মেলিন্ডা গেটস
ছবি: এএফপি

বিল ও মেলিন্ডা বলেছেন, ‘আমরা একসঙ্গে দম্পতি হিসেবে থাকতে পারব, এমনটা আর বিশ্বাস করি না।’ তাঁরা বলেন, ‘গত ২৭ বছরে আমরা অসাধারণ তিনটি সন্তান পেয়েছি। এমন একটা ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছি, যে ফাউন্ডেশন বিশ্বজুড়ে মানুষকে স্বাস্থ্যকর ও সক্ষম করে গড়ে তুলতে কাজ করছে। আমরা যে বিশ্বাস থেকে ওই ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু করেছি, সেটা থাকবে। এই ফাউন্ডেশনের কাজ একসঙ্গে চালিয়ে যাব। কিন্তু আমরা আর এটা বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমাদের জীবনের পরের ধাপে দম্পতি হিসেবে আমরা একসঙ্গে থাকতে পারব।’