স্বামীকে প্রসবকক্ষ থেকে বের করে দিলেন স্ত্রী

প্রতীকী ছবি রয়টার্স

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালের সন্তান প্রসবকক্ষ থেকে স্বামীকে বের করে দেন এক প্রসূতি। গর্ভকালীন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা নিয়ে স্বামী কটাক্ষ করার পর ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাজ করেন ওই নারী। খবর এনডিটিভির।

বিভিন্ন সংবাদ নিয়ে আলোচনা করার ওয়েবসাইট রেডিটে একটি পোস্ট দিয়েছেন ৩২ বছর বয়সী ওই মা। তিনি লিখেছেন, প্রসবকক্ষে তিনি যখন প্রসবব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন, তখন তাঁর সঙ্গে ওই কক্ষে ছিলেন স্বামীও। শুরুতে স্বামী খুব সহযোগিতামূলক আচরণ করছিলেন। কিন্তু প্রসবকক্ষের ধাত্রী গর্ভকালীন এ ভ্রমণ নিয়ে তাঁদের কিছু প্রশ্ন করার পরই বাধে বিপত্তি।

প্রথমবারের মতো মা হচ্ছিলেন ওই নারী। প্রসবকক্ষে ধাত্রী গল্প করতে করতে এ দম্পতির কাছে জানতে চান যে গর্ভাবস্থার একেবারে শেষের দিকের এ সময়ে তাঁরা অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন কি না? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে ওই নারী লিখেছেন, ‘জবাবে আমি বললাম, হ্যাঁ, কারণ যাত্রাটা আমার জন্য কঠিন ছিল। আমার স্বামী তখন বলে ওঠেন, আমার জন্যও। ওকে সামলানো খুব কঠিন ছিল।’

স্বামীর কটাক্ষমূলক এমন মন্তব্যের পর ধাত্রী তাঁর আলাপের বিষয়বস্তু পাল্টে ফেলার চেষ্টা করেন। তবে প্রসূতি নারী তখনো এ ইস্যুতে কথা বলে যাচ্ছিলেন। তিনি স্বামীর কাছ থেকে জানতে চান, এ কথার মধ্য দিয়ে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন? জবাবে স্বামী বুঝিয়ে বলেন, তিনি বলেছেন, গর্ভকাল শেষ হওয়ায় তিনি আনন্দিত, কারণ স্ত্রীকে আগের অবস্থায় ফিরে পাবেন, হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতার অবসান হবে।

ওই নারী রেডিটে লিখেছেন, তিনি স্বামীর ওই মন্তব্যে আঘাত পেয়েছেন। স্বামীকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। শুরুতে স্বামী বের হতে অস্বীকৃতি জানায়। ‘আমি তাকে বের হয়ে যেতে বললে সে সরতে চাচ্ছিল না। সন্তান জন্মের মুহূর্ত দেখতে দিতে না চাওয়ায় আমাকে গালি দিচ্ছিল সে। ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল।’

পোস্টটি শেয়ার হওয়ার পর তা হাজারো মানুষের নজর কেড়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অনেকে ওই নারীর প্রশংসা করেছেন। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘হুম, এসব মন্তব্য খুব পীড়াদায়ক। যদিও তিনি মজাচ্ছলে কথাগুলো বলেছেন, কিন্তু এটাতে মজা পাওয়ার মতো ভালো অবস্থায় তিনি (ওই প্রসূতি) ছিলেন না।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘এ হলো গৎবাঁধা ধারণা। শুধু ওই পুরুষেরই নয়, অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নিয়ে কারোরই এমন ভাবা উচিত নয়। তিনি (প্রসূতি) সন্তান জন্ম দিতে যাচ্ছেন। এটি কোনো সার্কাস নয়। অনেক পুরুষই প্রসবের সময়কে (প্রসবব্যথা এবং নারীর মৃত্যু ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকি) কিছু চিরাচরিত অভিজ্ঞতার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। মনে করেন, এমনটা ভাগ্য নির্ধারিত। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা আনন্দ খুঁজে পান।’

রেডিটে দেওয়া ওই পোস্ট ইতিমধ্যে ১৩ হাজারের বেশি আপ ভোট ও ৩ হাজার ৯০০ লাইক পেয়েছে।