ফেলে দেওয়া খাবারের খবর রাখছে এআই

রেস্তোরাঁয় খেতে বসে অনেকেই মূল্যবান খাবার নষ্ট করেনছবি : রয়টার্স

রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে এসে কী কী নষ্ট করছেন, তার ওপর নজরদারি করতে ময়লার ঝুড়িতে ক্যামেরা বসিয়েছে একটি মার্কিন বহুজাতিক হোটেল কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা গেছে, তারা সকালে নাশতায় যে ফরাসি পেস্ট্রি ক্রেতাদের খেতে দেন, তা আকারে অনেক বড়। অনেকেই তা পুরোটা খান না।

এতে খাবার নষ্টের পাশাপাশি লোকসানও হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে আরেকটি সুপারমার্কেট কর্তৃপক্ষ তাদের বিক্রীত পণ্যের তথ্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখতে পেয়েছে, তাদের হলুদ রঙের পেঁয়াজ বিক্রি ভালো নয়। এগুলো নষ্ট হয় বেশি। রেস্তোরাঁ বা সুপারমার্কেটের কর্তৃপক্ষকে এসব তথ্য পেতে সহায়তা করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)।

খাবার নষ্ট হওয়ার এ সমস্যা সম্পর্কে আগে হোটেল বা রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ খুব বেশি খেয়াল করেনি। কিন্তু এ সমস্যাই এখন বড় হয়ে উঠেছে। এ সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছে উদীয়মান এআই শিল্প।

গবেষকেরা বলছেন, রেস্তোরাঁ বা সুপারমার্কেট থেকে যেসব আবর্জনা তৈরি হয়, সেগুলো অনেক স্থানে জমে যায়, মাটি ভরাট করে ফেলে। এ ছাড়া গ্রিনহাউস গ্যাস তৈরি করে পরিবেশের ক্ষতি করে। রেস্তোরাঁগুলোর এ সমস্যা সমাধান করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রোগ্রাম (টুল) তৈরি করেছে যুক্তরাজ্যের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান উইননাউ। তারা মূলত রেস্তোরাঁর রান্নাঘরের আবর্জনার ঝুড়িতে ক্যামেরা বসায়।

এতে থাকে বিশেষ অ্যালগরিদম। এটি খাবারের মূল্যবান অংশ বা কলার খোসার মতো সাধারণ আবর্জনার পার্থক্য ধরতে পারে। ইতিমধ্যে হিলটন হোটেলস কর্তৃপক্ষ তাদের কয়েকটি রেস্তোরাঁয় এ প্রোগ্রাম চালু করেছে। তারা দেখেছে, তাদের অতিথিদের সরবরাহ করা পেস্ট্রিগুলো আকারে অনেক বড়। তাই এগুলো নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া সেদ্ধ শিম অনেকেই না খেয়ে থালায় রেখে উঠে যাচ্ছেন।

রিফেড নামে একটি গবেষণা সংস্থা জানায়, রেস্তোরাঁয় যে খাবার নষ্ট হয়, তার ৭০ শতাংশই থালায় পড়ে থাকে। এ থেকে বোঝা যায়, কতটুকু খাবার সরবরাহ করতে হবে, তা নিয়ে ভাবা প্রয়োজন। এ কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বড় ধরনের সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের এক তথ্যে বলা হয়, বিশ্বে শুধু ২০২২ সালে ১০০ কোটি মেট্রিক টন খাবার নষ্ট হয়েছে। নষ্ট খাবার থেকে যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়, তা বৈশ্বিক নির্গমনের ৮ থেকে ১০ শতাংশ। এটি প্রায় জাহাজ ও উড়োজাহাজশিল্প থেকে নির্গত গ্রিনহাউস গ্যাসের সমান।