রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে তোড়জোড় শুরু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মস্কো ও ওয়াশিংটন যে ২৮ দফা পরিকল্পনা তৈরি করেছিল, তা নিয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বৈঠক হয়েছে। এমন নানামুখী তৎপরতার মধ্যে ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ থামাতে ‘হয়তো ভালো কিছু ঘটছে’।
আজ সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনায় বড় অগ্রগতি হওয়াটা কি আসলেই সম্ভব? এমনটা যতক্ষণ না দেখতে পাবেন, ততক্ষণ বিশ্বাস করবেন না। তবে হয়তো ভালো কিছু ঘটছে। সৃষ্টিকর্তা আমেরিকার ভালো করুন।’
প্রায় চার বছর ধরে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধ থামাতে সম্প্রতি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের তৈরি ওই ২৮ দফা পরিকল্পনার বিষয়টি সামনে আসে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইউক্রেনকে নিজেদের কিছু ভূখণ্ড রাশিয়ার হাতে তুলে দিতে হবে। এ ছাড়া নিজেদের সামরিক বাহিনীর আকার কমাতে হবে কিয়েভকে। সামরিক জোট ন্যাটোতেও যোগ দিতে পারবে না তারা।
এই পরিকল্পনায় রাশিয়ার ইচ্ছার প্রতিফলন রয়েছে বলে দাবি ইউক্রেন ও দেশটির ইউরোপীয় মিত্রদের। তবে পরিকল্পনাটি মেনে নেওয়ার জন্য ইউক্রেনকে ক্রমেই চাপ দিয়ে যাচ্ছিল ওয়াশিংটন। দেশটিকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি ট্রাম্প হুমকি দিয়ে এ-ও বলেছিলেন, পরিকল্পনা না মানলে ইউক্রেন ও ইউরোপ নিজেদের লড়াই নিজেরাই লড়বে।
যদিও এই পরিকল্পনাই চূড়ান্ত নয় বলেও উল্লেখ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এরই মধ্যে গতকাল রোববার থেকে জেনেভায় ইউক্রেন ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মার্কিন কর্মকর্তারা। সেদিনই যৌথ বিবৃতি দিয়ে কিয়েভ ও ওয়াশিংটন জানায়, শান্তিচুক্তিতে ইউক্রেনকে রাজি করানোর জন্য ২৮ দফা পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
জেনেভায় যে ‘পরিমার্জিত’ পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে, সে বিষয়ে রাশিয়াকে কিছু জানানো হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। আজ সকালে তিনি বলেন, এর আগে রাশিয়ার কাছে কাছে শান্তি পরিকল্পনার যে খসড়া পাঠানো হয়েছিল, তাতে পরিমার্জন করা হচ্ছে, তা ক্রেমলিন বুঝতে পেরেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রেমলিনকে কিছু জানানো হয়নি।
রাশিয়ার কাছে যে পরিকল্পনা খসড়া পাঠানো হয়েছে, তা নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনে আলাপ করেছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। ফোনালাপে পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ভিত্তি তৈরি করতে পারে। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে সংঘাত থামাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাঁর দেশ।