এপস্টেইন–সংক্রান্ত নথির অনেক তথ্য গোপন রাখায় ভুক্তভোগীরা সন্দিহান ও ক্ষুব্ধ

জেফরি এপস্টেইন ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী গিলেন ম্যাক্সওয়েলফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক প্রয়াত জেফরি এপস্টেইন–সংক্রান্ত কয়েক হাজার নথি প্রকাশ করা হলেও যাঁরা অধীর আগ্রহে এগুলোর অপেক্ষায় ছিলেন, তাঁদের অনেকেই হতাশ হয়েছেন।

মার্কিন কংগ্রেসে পাস হওয়া একটি আইনের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (ডিওজে) এপস্টেইনের অপরাধ–সংক্রান্ত নতুন নথি প্রকাশ করেছে। আইনের আওতায় এপস্টেইন–সংশ্লিষ্ট সব নথি প্রকাশের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে সর্বশেষ প্রকাশিত নথিগুলোর কিছু জায়গায় কালো করে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আর কিছু নথি একেবারেই জনসম্মুখে আনা হয়নি।

যেসব আইনপ্রণেতা এসব নথি প্রকাশের জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন, তাঁরা গত শুক্রবার প্রকাশিত নথিগুলোকে অসম্পূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, বিচার বিভাগের উদ্যোগ আন্তরিক নয়।

কয়েকজন আইনবিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেছেন, নথির বিভিন্ন অংশ কালো রঙে ঢেকে রাখার বিষয়টি চলমান ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

কয়েকজন আইনবিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেছেন, নথির বিভিন্ন অংশ কালো রঙে ঢেকে রাখার বিষয়টি চলমান ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

তবে নথি প্রকাশের দিন শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাটর্নি টড ব্ল্যাঞ্চ বলেছেন, বিচার বিভাগ এপস্টেইনের সঙ্গে জড়িত ১ হাজার ২০০–এর বেশি ভুক্তভোগী বা তাঁদের স্বজনদের শনাক্ত করেছে। তাঁদের পরিচয় ফাঁস হয়—এমন তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ প্রকাশিত নথিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে এপস্টেইনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গিলেন ম্যাক্সওয়েলের একটি ছবি আছে। এপস্টেইন মার-এ-লাগোতে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন—এমন একটি তথ্যও উল্লেখ করা আছে। এ ছাড়া সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের একাধিক ছবি প্রকাশ হয়েছে।

ট্রাম্প বরাবরই দাবি করে আসছেন, তিনি এপস্টেইন–সংক্রান্ত কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। এপস্টেইনের ভুক্তভোগীদের কেউই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ করেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাটর্নি টড ব্ল্যাঞ্চ বলেছেন, বিচার বিভাগ এপস্টেইনের সঙ্গে জড়িত ১ হাজার ২০০-এর বেশি ভুক্তভোগী বা তাঁদের স্বজনদের শনাক্ত করেছে। তাঁদের পরিচয় ফাঁস হয়—এমন তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

একইভাবে এপস্টেইনের নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের কেউ বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধেও কোনো অনিয়মের অভিযোগ তোলেননি। ক্লিনটনও দাবি করেছেন, এপস্টেইনের যৌন নিপীড়ন–সংক্রান্ত অপরাধ সম্পর্কে তিনি কিছু জানতেন না।

সর্বশেষ প্রকাশিত অন্যান্য ছবিতে এপস্টেইনের বাড়ির ভেতরের দৃশ্য, তাঁর বিদেশ ভ্রমণ ও কয়েকজন তারকা ব্যক্তিত্বকে দেখা গেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সংগীত তারকা মিক জ্যাগার, মাইকেল জ্যাকসন ও ডায়ানা রস। এ ছাড়া ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেনের ছবিও দেখা গেছে। ছবিতে দেখা গেছে, অ্যান্ড্রু কয়েকজন নারীর কোলে শুয়ে আছেন; আর পেছনে নারী পাচারকারী ম্যাক্সওয়েলকে হাসিমুখে দেখা গেছে।

নথিতে কারও নাম বা ছবি থাকা মানেই যে তিনি কোনো অপরাধে জড়িত, তা নয়। এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন নথিতে বা আগের প্রকাশিত নথিতে যাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাঁদের অনেকেই কোনো অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তবে নথির অনেক তথ্য ঢেকে দেওয়া রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ বলেছে, তারা কিছু শর্ত সাপেক্ষে কংগ্রেসের নথি প্রকাশের অনুরোধ মেনে চলবে।

আরও পড়ুন