অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর প্রক্রিয়ার আওতা বাড়িয়েছেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্র থেকে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া আগে থেকেই ছিল। তবে এর আওতায় যেসব অভিবাসী পড়তেন, এখন তাঁদের সংখ্যা আরও বাড়ছে। নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নেওয়া আরও কিছু পদক্ষেপে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড়সহ দেশটি থেকে তাড়ানোর প্রক্রিয়া বিস্তৃত হচ্ছে। যেসব অভিবাসী টানা দুই বছর বা তার বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের প্রমাণ দেখাতে পারবেন না, তাঁরা এর আওতায় পড়বেন।
অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ‘দ্রুত অপসারণ’–বিষয়ক একটি নীতি রয়েছে। দেশটির আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১৬০ কিলোমিটার মধ্যে আটক হওয়া নথিপত্রবিহীন অভিবাসীদের ক্ষেত্রে ওই নীতির প্রয়োগ হতো। তবে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থান থেকে আটক অবৈধ অভিবাসীদের ক্ষেত্রে এটা প্রয়োগ করতে পারবেন দেশটির কর্মকর্তারা।
গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় বসেই তিনি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র–মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। এখন সরকর চাইলে সেখানে সামরিক বাহিনীর মোতায়েন করতে পারবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে গণহারে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রেজিস্ট্রারের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক নোটিশ অনুযায়ী, অভিবাসীদের নিয়ে ওই নীতি কার্যকর হয়েছে ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে। নোটিশে বলা হয়েছে, এ পরিবর্তনের প্রভাব জাতীয় নিরাপত্তা ও জনগণের নিরাপত্তা বাড়াবে। একই সঙ্গে অভিবাসনসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়ার সুযোগ তৈরির মাধ্যমে সরকারি খরচ কমাবে।
সোমবার ক্ষমতা নেওয়ার পর অভিবাসীসংক্রান্ত আরও কিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে নথিপত্রহীন মা–বাবার সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিল করার একটি সিদ্ধান্ত। মঙ্গলবারও সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিবাসনসংক্রান্ত একটি নীতি থেকে সরে গেছে বর্তমান প্রশাসন। সে অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর কিছু দিকনির্দেশনা বাতিল করেছে। ওই নির্দেশনায় স্কুলের মতো ‘স্পর্শকাতর’ এলাকায় অভিবাসন কর্মকর্তাদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হতো।
নতুন আরেক নির্দেশনায় ‘মানবিকতার খাতিরে ছাড়’ দেওয়ার সুবিধাও বাতিল করা হয়েছে। ওই সুবিধার আওতায় সুনির্দিষ্ট কিছু শ্রেণির অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হতো। এখন বিষয়টি প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা যাচাই–বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। এ ছাড়া সংবাদমাধ্যম সিবিএসের হাতে আসা একটি নথিতে দেখা গেছে, সব শরণার্থীর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ বাতিল করেছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।
তবে অভিবাসীদের বিতাড়নের প্রক্রিয়ার ব্যাপ্তি বাড়ানোটা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হতে পারে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ধরা পড়া অবৈধ অভিবাসীদের আদালতে হাজির হওয়ার একটি নোটিশ দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে আদালতে তাঁরা আশ্রয় প্রার্থনার জন্য নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে পারেন। এ নিয়ে একজন বিচারকের সিদ্ধান্তের আগপর্যন্ত সাধারণত কাউকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা যায় না।