খামেনিকে শ্রদ্ধা করতেন রুশদির ‘হামলাকারী’

হামলার পর রুশদিকে হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়া হয়
ছবি: এএফপি

ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির  সন্দেহভাজন হামলাকারী হাদি মাতার বলেন, তিনি  ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনিকে শ্রদ্ধা করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বুধবার নিউইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন হাদি মাতার। তবে হাদি বলেছেন, খামেনির দেওয়া কোনো ফতোয়া হামলা করতে তাঁকে প্ররোচিত করেনি।  ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই।

শিটোকোয়া কাউন্টি কারাগার থেকে নিউইয়র্ক পোস্ট ওই ভিডিও সাক্ষাৎকার নিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। তাতে হাদি বলেন, ‘আমি আয়াতুল্লাকে শ্রদ্ধা করি। আমি মনে করি তিনি একজন মহান ব্যক্তি।’
ইউটিউবে রুশদির ভিডিও দেখেছেন বলে জানান হাদি। তিনি রুশদি সম্পর্কে বলেন, ‘তাঁকে আমি খুব বেশি পছন্দ করি না। তিনি ইসলামের ওপর হামলা করেছেন। তিনি মুসলিমদের বিশ্বাসে আঘাত করেছেন।’

রুশদির উপন্যাস ‘দ্য সেটানিক ভার্সেসের’ মাত্র কয়েক পাতা পড়েছেন বলে জানান হাদি। নিউইয়র্কে শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটে সফর করবেন রুশদির এমন একটি টুইট থেকে সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা মাথায় আসে তাঁর।

শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটে সাহিত্যবিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ৭৫ বছরের রুশদিকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।

১৯৮৮ সালে রুশদির চতুর্থ উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশিত হয়। তাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পরের বছর ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি এই লেখককে হত্যার ফতোয়া দেন। এরপর দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন সালমান রুশদি। গত শনিবার আদালতে হাদি হত্যার উদ্দেশে হামলার কথা অস্বীকার করেছেন।

নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে হাদি বলেন, তিনি হামলার আগের দিন বাসে নিউইয়র্কের বাফেলো শহরে আসেন। এরপর একজনের গাড়িতে উঠে শিটোকোয়াতে যান। হামলার আগের দিন নিউইয়র্কে ঘাসের ওপর ঘুমিয়েছিলেন। এখানে সেখানে ঘুরে বেড়িয়েছেন।

নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাদি আরও বলেন, ‘যখন আমি শুনেছিলাম তিনি (সালমান রুশদি) বেঁচে আছেন আমি বিস্মিত হয়েছিলাম।’

নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের ফেয়ারভিউ শহরের বাসিন্দা হাদির মা লেবাননের বংশোদ্ভূত সিলভানা ফেরদৌস ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন ‘হাদি অন্তর্মুখী স্বভাবের ছিল। তাঁর মেজাজ ওঠানামা করত।’ মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়া লেবাননে থাকা বাবাকে দেখতে যাওয়ার পর থেকে হাদি ইসলামের অনুসারী হয়। নিউইয়র্কে আগামীকাল শুক্রবার হাদিকে আদালতে হাজির করা হবে।