মানুষের মস্তিষ্কে যন্ত্র বসানোর পরীক্ষায় নামছেন ইলন মাস্ক

ইলন মাস্ক
রয়টার্স ফাইল ছবি

বিশ্বের শীর্ষ ধনী প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক বলেছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠান নিউরালিংক এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছে, যা মানুষের মস্তিষ্কে বসানো যাবে। এ যন্ত্র দিয়ে মানুষ কম্পিউটারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এ যন্ত্র মানুষের মস্তিষ্কে পরীক্ষা চালানো হবে।

ইলন মাস্ক নানা সময়ে নানা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছেন। তাঁর অন্যতম একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বা স্টার্টআপ এই নিউরালিংক। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সম্পর্কে ইলন মাস্ক বলেছেন, নিউরালিংক এমন এক ধরনের কম্পিউটারের সঙ্গে যোগাযোগ পদ্ধতি বা ইন্টারফেস তৈরি করছে, যাতে ব্যবহারকারী সরাসরি তাঁর চিন্তাভাবনা কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমবিষয়ক এক উপস্থাপনার সময় ইলন মাস্ক বলেন, নতুন প্রযুক্তি মানুষের ওপর পরীক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রের খাবার ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) কাছে অধিকাংশ নথি জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে মানুষের মস্তিষ্কে প্রথম নিউরালিংক বসানো যাবে।

ইলন মাস্ক অবশ্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার আগে যথেষ্ট সতর্ক থাকার কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের মস্তিষ্কে বিশেষ প্রযুক্তি বসানোর আগে আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। মানুষের মস্তিষ্কে বসানোর আগে এ বিষয়ে যথেষ্ট সতর্কতা ও নিশ্চিত হয়ে তবেই সামনে এগোনো হবে।’

সম্প্রতি টুইটার কিনে আলোচনায় আসা ইলন মাস্ক মহাকাশ সংস্থা স্পেস এক্স, গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলাসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠানে নানা উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প ও পূর্বাভাস নিয়ে কাজ করেন, যার বেশ কিছু বাস্তব দুনিয়ায় কার্যকর হয় না। এর আগে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ইলন মাস্ক বলেছিলেন, ২০২০ সালেই নিউরালিংক মানুষের মস্তিষ্কে বসানো হবে। নিউরালিংকের এই যন্ত্র ছোট্ট একটি কয়েনের সমান। ইতিমধ্যে এটি বানরের মস্তিষ্কে বসিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, নিউরালিংক ব্যবহার করে ভিডিও গেম খেলছে।

ইলন মাস্ক বলছেন, তাঁর এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের দৃষ্টিহীন ও চলাফেরায় অক্ষম ব্যক্তিদের সহায়তা করা। ইলন মাস্ক বলেন, ‘যে ব্যক্তির চলাফেরা করা প্রায় অসম্ভব, তাদের সাহায্য করার প্রাথমিক লক্ষ্য তাঁদের। এ ছাড়া নিউরালিংক ব্যবহারে শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা দ্রুত ফোনে যোগাযোগ করতে পারবেন। এটি যতই অলৌকিক মনে হোক না কেন, আমরা নিশ্চিত যে শিরদাঁড়াবিচ্ছিন্ন ব্যক্তির সম্পূর্ণ শরীরের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

স্নায়বিক রোগের চিকিৎসার বাইরে মাস্কের লক্ষ্য হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাতে মানুষকে ছাড়িয়ে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করা।

নিউরালিংক ছাড়াও মস্তিষ্কে প্রযুক্তি বসাতে কাজ করছে সিনক্রন নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান। গত জুলাই মাসে সিনক্রন দাবি করে, যুক্তরাষ্ট্রে তারা প্রথম মস্তিষ্কে ব্রেইন-মেশিন ইন্টারফেস বসিয়েছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন