চুক্তির জন্য ‘প্রস্তুত’ পুতিন, ‘যুদ্ধ শুরুর’ জন্য জেলেনস্কিকে দুষলেন ট্রাম্প
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তির জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রস্তুত রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এ শান্তি চুক্তির পথটা যে মোটেও মসৃণ নয়, সে ইঙ্গিত দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তাঁর ভাষ্যমতে, চুক্তির মূল অংশগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানো সহজ নয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। যুদ্ধ থামাতে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উইটকফ। পরে গতকাল সোমবার সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সাক্ষাতে ‘পুতিন যে অনুরোধটি করেছেন, সেটি হলো স্থায়ীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা।’
সাক্ষাৎকারে স্টিভ উইটকফ বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা এমন কিছুর দ্বারপ্রান্তে রয়েছি, যা বড় পরিসরে বিশ্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, এই পর্যায়ে আসতে কিছুটা সময় লেগেছে। তবে পাঁচ ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর তাঁর মনে হয়েছে—একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া ‘বাণিজ্যিক সুযোগগুলো’ ব্যবহারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্কে নতুন করে গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে উইটকফের মতো চুক্তি নিয়ে অতটাও আশার কথা শোনাননি সের্গেই লাভরভ। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম কমারসেন্তকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘একটি সমঝোতার মূল বিষয়গুলো নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো সহজ নয়। সেগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে।’ লাভরভ বলেন, সব পক্ষের জন্য সুবিধাজনক হয়, এমন একটি চুক্তির বিষয়ে তাঁরা সচেতন।
চুক্তি নিয়ে রাশিয়ার অবস্থান ২০২৪ সালে পুতিন স্পষ্ট করেছেন বলে জানান লাভরভ। সে বছরের জুন মাসে পুতিন বলেছিলেন, যুদ্ধ বন্ধের আগে ইউক্রেনকে অবশ্যই পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাদ দিতে হবে। আর দেশটিতে রাশিয়ার দখল করা চারটি অঞ্চল থেকে নিজেদের সেনাসদস্যদের প্রত্যাহার করতে হবে কিয়েভকে।
বর্তমানে ইউক্রেনের পাঁচ ভাগের প্রায় এক ভাগ অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০১৪ সালে কিয়েভে মস্কোপন্থী সরকারের পতনের পর দেশটির ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রুশ বাহিনী। আর চলমান যুদ্ধের সময় ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন—এই চার অঞ্চল কথিত গণভোটের মাধ্যমে নিজ ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে রাশিয়া।
এদিকে গত রোববার ইউক্রেনের সুমি শহরে রাশিয়ার হামলায় ৩৫ জন নিহত হওয়ার পর যুদ্ধ শুরুর জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দুষেছেন ট্রাম্প। জেলেনস্কিকে ইঙ্গিত করে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আপনার ২০ গুণ বড়, এমন কারও সঙ্গে আপনি যুদ্ধ শুরু করতে পারেন না। আর এরপর আশা করতে পারেন না লোকজন আপনাকে ক্ষেপণাস্ত্র দেবে।’