খুঁজছিলেন ঝিনুক, পেলেন ১২৮ বছর আগের জাহাজ
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সীমান্তে পাশাপাশি রয়েছে পাঁচটি হ্রদ। হ্রদগুলো ‘গ্রেট লেকস’ নামে পরিচিত। এসব হ্রদে আছে আগ্রাসী প্রজাতির একটি ঝিনুক। এই ঝিনুক নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করছেন দুই চলচ্চিত্র নির্মাতা। তাঁরা তথ্যচিত্র নির্মাণ করতে গিয়ে হ্রদের তলদেশে খুঁজে পেয়েছেন একটি জাহাজ।
দুই চলচ্চিত্র নির্মাতা হলেন ইভন ড্রেভার্ট ও জ্যাক মেলনিক। তাঁরা পাঁচটি হ্রদের একটি হুরনে আগ্রাসী কোয়াগা ঝিনুকের চিত্রধারণ করছিলেন। এ জন্য হ্রদের গভীরে পাঠিয়েছিলেন পানিতে চিত্রধারণ করতে পারে এমন ড্রোন। ড্রোনটির মাধ্যমে হ্রদের তলদেশে একটি জাহাজ দেখতে পান।
আফ্রিকা নামের জাহাজটি ডুবে যায় ১৮৯৫ সালে। জাহাজটি কয়লা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্য থেকে কানাডার অন্টারিও প্রদেশে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে ঝোড়ো বাতাস ও খরস্রোতের কারণে হুরন হ্রদে সেটি ডুবে যায়। এরপর ১২৮ বছর জাহাজটির কোনো খোঁজ পায়নি কর্তৃপক্ষ।
ড্রোন দিয়ে হ্রদের তলদেশে জাহাজের মতো কিছু একটা দেখতে পেয়ে ড্রেভার্ট ও মেলনিক কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। ভালোভাবে দেখার জন্য এরপর তাঁরা একটি রোবোটিক ক্যামেরা পাঠান হ্রদের তলদেশে। রোবোটিক ক্যামেরার মাধ্যমে দেখে নিশ্চিত হন এটি সত্যিই জাহাজ।
মেলনিক বলেন, ‘ক্যামেরা যত জাহাজের কাছাকাছি যাচ্ছিল ততই বিষয়টি আমাদের কাছে স্পষ্ট হচ্ছিল। জাহাজটি কাঠের তৈরি। তবে অবাক করা বিষয় হলো বহু বছর ধরে হ্রদের তলদেশে পড়ে থাকলেও জাহাজটি বেশ অক্ষত ছিল।’
মেলনিক বলেন, ‘হ্রদের তলদেশে ঝিনুক খুঁজতে যাওয়ার কারণে আমরা জাহাজটির অস্তিত্ব খুঁজে পেলাম। হ্রদের প্রায় ৩০০ ফুট গভীরে জাহাজটি দেখতে বাড়তি আলোরও প্রয়োজন হয়নি।’
বহু বছর আগে ওই জাহাজে থাকা যেসব মানুষ নিখোঁজ হয়েছিলেন, তাঁদের স্বজনদের কেউ কেউ এখন যোগাযোগ করছেন ওই দুই চলচ্ছিত্র নির্মাতার সঙ্গে।
মেলনিক বলেন, ‘জাহাজটি পাওয়ার পর ওই জাহাজডুবির ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের অনেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এটা আমাদের জন্য একটা দারুণ বিষয়। জাহাজডুবির সেই ঘটনায় মৃতদের স্মরণে কিছু করা যায় কি না, এ নিয়ে তাদের পরিবারের সঙ্গে কাজ করছি আমরা।’