ব্লিঙ্কেনের বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে হট্টগোল, বের করে দেওয়া হলো দুই সাংবাদিককে

যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলকে সমর্থন নিয়ে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে প্রশ্ন করার পর সাংবাদিককে জোর করে কক্ষ থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছেন নিরাপত্তাকর্মীরাছবি: রয়টার্সের ভিডিও থেকে নেওয়া

যুক্তরাষ্ট্রের গাজা নীতি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে রয়েছে বিভিন্ন মহলে। উপত্যকাটিতে চরম নৃশংসতার পরও ইসরায়েলকে ওয়াশিংটনের এককাট্টা সমর্থন দিয়ে যাওয়া নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। তবে নিজের বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে এই ক্ষোভের মুখে পড়বেন, তা হয়তো ভাবেননি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে গাজা নীতি ঘিরে ব্লিঙ্কেনের তীব্র সমালোচনা করেছেন কয়েকজন সাংবাদিক। এতে পররাষ্ট্র দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে একপ্রকার হট্টগোল দেখা দেয়।

এই সাংবাদিকদের একজন স্বাধীন সাংবাদিক স্যাম হুসেইনি। বিশ্বের প্রতি ওয়াশিংটনের দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে সোচ্চার তিনি। বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে হুসেইনি চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘অপরাধী! আপনি কেন হেগে নেই।’ এর মধ্য তিনি মূলত নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। এর পরপরই হুসেইনিকে জোর করে তুলে সংবাদ সম্মেলন কক্ষের বাইরে নিয়ে যান নিরাপত্তাকর্মীরা। তখনো তিনি ব্লিঙ্কেনকে নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে চলেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সংবাদ সম্মেলনকক্ষে সাধারণত এমন হট্টগোলের চিত্র দেখা যায় না। তবে গাজা সংঘাত ঘিরে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ ও কূটনৈতিক সমর্থনের জন্য ব্লিঙ্কেনকে নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক ছিল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই নৃশংসতার কারণে অপরাধ আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

আরেক সাংবাদিক ম্যাক্স ব্লুমেনথাল সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেনকে বলেন, ‘মে মাসে যখন একটি চুক্তি হয়েছিল, তখন কেন আপনি বোমা পাঠিয়েছিলেন?’ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে সমালোচনামুখর সংবাদমাধ্যম গ্রেজোনের সম্পাদক। এই প্রশ্নের পর ব্লুমেনথালকেও নিরাপত্তাকর্মীরা কক্ষের বাইরে নিয়ে যান।

২০ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনের মেয়াদ। এদিনই শেষ হচ্ছে ব্লিঙ্কেনের মন্ত্রিত্বও। এর আগে বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে বেশ শান্ত ছিলেন তিনি। গাজা নিয়ে আরেক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইসরায়েলের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থনের পরিপ্রেক্ষিতেই গাজা নীতি নির্ধারণ করেছে ইসরায়েল সরকার।

যদিও গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ওয়াশিংটনে বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের বিব্রতকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে ব্লিঙ্কেনকে। এই যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে ভার্জিনিয়ায় তাঁর বাসার সামনে কয়েক মাস ধরে ঘাঁটি গেড়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। ব্লিঙ্কেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের গাড়িতে রক্তের প্রতীক হিসেবে লাল রং ছুড়ে মারার ঘটনাও ঘটেছে।