মৃত পাখি উড়বে ড্রোন হয়ে

নিউ মেক্সিকো ইনস্টিটিউট অব মাইনিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা হাসানালিয়ান (বাঁয়ে) ও পিএইচডি শিক্ষার্থী ব্রেন্ডেন হারকেনহফ মৃত পাখির ট্যাক্সিডার্মি দিয়ে তৈরি ড্রোন নিয়ে গবেষণা করছেন।
ছবি: রয়টার্স

মৃত পাখিদের ফেলে না দিয়ে ভিন্ন উপায়ে সংরক্ষণের চেষ্টা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের একদল গবেষক।

অঙ্গরাজ্যটির সোকরো এলাকায় নিউ মেক্সিকো ইনস্টিটিউট অব মাইনিং অ্যান্ড টেকনোলজির একদল গবেষক মৃত পাখির সংরক্ষিত ট্যাক্সিডার্মি (রাসায়নিক ও ট্যানিংয়ের মাধ্যমে মৃত প্রাণীর শরীর প্রধানত চামড়া সংরক্ষণ) দিয়ে ড্রোন তৈরি করছে। সাধারণত গবেষণা বা পাঠদানের উদ্দেশ্যে এই ট্যাক্সিডার্মি করা হয়। এতে ওই পাখিটিকে জীবন্ত দেখায়। ড্রোন পরিচালনার কাজে এ পাখি ব্যবহার করা হবে।

এ প্রকল্পের প্রধান ও ইনস্টিটিউটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক মোস্তফা হাসানালিয়ান বলেছেন, তিনি মূলত যে ফল খুঁজছেন, তা কৃত্রিম বা যান্ত্রিক পাখি দিতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আমরা ভাবনাটি নিয়ে এসেছি যে আমরা...এ ক্ষেত্রে মৃত পাখি ব্যবহার করতে পারি এবং সেসব দিয়েই (ড্রোন) তৈরি করতে পারি। সেখানে সবকিছুই আছে...আমরা শুধু রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করি।’

মোস্তফা হাসানালিয়ান বলেন, বর্তমানে মৃত পাখির ট্যাক্সিডার্মি দিয়ে তৈরি ড্রোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত স্থানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পাখির উড়ার ধরন আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে। এ বিষয়গুলো প্রয়োগ করা যেতে পারে।

এ প্রকল্পের প্রধান আরও বলেন, ‘পাখিরা নিজেদের মধ্যে কীভাবে শক্তি পরিচালনা করে, তা যদি আমরা জানতে পারি...তাহলে আমরা (এটি) ভবিষ্যতে বিমানশিল্পে প্রয়োগ করতে পারব। এতে আরও শক্তি সঞ্চয় এবং আরও জ্বালানি সাশ্রয় করা যাবে।’

নিউ মেক্সিকো ইনস্টিটিউট অব মাইনিং অ্যান্ড টেকনোলজির পিএইচডির শিক্ষার্থী ব্রেন্ডেন হারকেনহফ এ গবেষণায় রং ও ওড়ার দক্ষতার ওপর জোর দিচ্ছেন। যদিও অনেকেই সঙ্গীদের আকৃষ্ট করার বা ছদ্মবেশ ধারণ করার উপায় হিসেবে পাখির রংকে দেখে থাকেন। আর রং কীভাবে ওড়ার দক্ষতাকে প্রভাবিত করে, তা নিয়েই গবেষণা করছেন ব্রেন্ডেন হারকেনহফ।

পাখিরা নিজেদের মধ্যে কীভাবে শক্তি পরিচালনা করে, তা যদি আমরা জানতে পারি...তাহলে আমরা (এটি) ভবিষ্যতে বিমানশিল্পে প্রয়োগ করতে পারব। এতে আরও শক্তি সঞ্চয় এবং আরও জ্বালানি সাশ্রয় করা যাবে।
মোস্তফা হাসানালিয়ান, প্রকল্প প্রধান ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক

ব্রেন্ডেন হারকেনহফ বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ সিদ্ধান্তে এসেছি, নির্দিষ্ট রং প্রয়োগ করলে আমাদের ফিক্সড-উইং এয়ারক্রাফটের ওড়ার দক্ষতা পরিবর্তন হতে পারে। আর আমরা বিশ্বাস করি, পাখিদের ক্ষেত্রে তা সত্য।’

মোস্তফা হাসানালিয়ান বলেন, মৃত পাখির ট্যাক্সিডার্মি দিয়ে তৈরি ড্রোনটি সর্বোচ্চ ২০ মিনিট পর্যন্ত উড়তে পারে। পরবর্তী পর্যায়ে কীভাবে এ সময় দীর্ঘায়িত করা যায় এবং বনে জীবন্ত পাখিদের মধ্যে এটা নিয়ে পরীক্ষা করা যায়, তা নির্ধারণ করতে হবে।