এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো স্থগিত করা হলো যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নাসার চন্দ্রাভিযান। আজ শনিবার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বিশাল একটি রকেট চাঁদে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু আর্টেমিস–১ নামের অভিযানটি শেষমেশ আবার স্থগিত করা হয়।
যদিও এর আগে রকেট উৎক্ষেপণ দেখতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার সমুদ্রসৈকতে চার লাখের বেশি মানুষ জড়ো হন। কিন্তু তাঁরা সেই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হতে পারলেন না।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, উৎক্ষেপণ প্রস্তুতির প্রথম দিকে রকেটটিতে হাইড্রোজেন লিকের ঘটনা ঘটে। নিয়ন্ত্রণকারী বিজ্ঞানীরা সেটা বন্ধ করতে পারেননি। ফলে রকেট উৎক্ষেপণ আবার স্থগিত করতে বাধ্য হন তাঁরা। নাসা সোমবার বা মঙ্গলবার আবারও রকেটটি উৎক্ষেপণের চেষ্টা করবে। তাদের সেই সুযোগ রয়েছে।
নাসার এযাবৎকালের নির্মিত সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট হচ্ছে এবারের স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস)। কিন্তু এটাতে কোনো নভোচারী থাকছেন না। এই সিস্টেম থেকে যদি সফলভাবে রকেট উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হয়, তবে তা নাসার জন্য ঐতিহাসিক এক ঘটনা হবে। এর মধ্য দিয়ে নাসার আর্টেমিস মিশনের কার্যক্রম শুরু হবে।
রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র হিসেবে কেনেডি স্পেস সেন্টার সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ ছিল। কিন্তু স্থানীয় সমুদ্রসৈকত থেকে নাসার সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট উৎক্ষেপণের দৃশ্য উপভোগ করতে সেখানে হাজির হন হাজারো মানুষ। রকেট উৎক্ষেপণের আগের দিন কোকোয়া সৈকতে আসা আলবার্তো টিরাডো বলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, তখনকার অ্যাপোলো চন্দ্রাভিযানের বিষয়গুলো মনে পড়ে। আমি এখন সেই শক্তি অনুভব করতে চাই, যা ষাটের দশকের লোকজন অনুভব করেছিলেন।’
এর আগে গত সোমবার কারিগরি ত্রুটির কারণে শেষ মুহূর্তে রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। ওই সময় স্থানীয় ব্রেভার্ড কাউন্টি কর্তৃপক্ষ এক থেকে দুই লাখ দর্শক প্রত্যাশা করেছিল। ব্রেভার্ড কাউন্টি যোগাযোগ পরিচালক ডন ওয়াকার বলেন, সোমবারের চেয়ে শনিবার দর্শকসংখ্যা দ্বিগুণ হবে।
এর আগে ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময়ই মহাকাশ সংস্থা স্পেস এক্সের নভোচারীসহ রকেট উৎক্ষেপণ দেখেছিলেন ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ। উপকূলের হোটেল ও গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাগুলো কয়েক সপ্তাহ ধরে আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছেন কেউ কেউ।
নাসার পক্ষ থেকে নভোচারীবিহীন আর্টেমিস–১–কে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ বলা হচ্ছে। এসএলএস রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওরিয়ন ক্যাপসুলটি মহাকাশে ছয় সপ্তাহ পার করবে। এরপর এটি চাঁদকে অতিক্রম করে ৪০ হাজার মাইল দূরে যাবে। এখন পর্যন্ত মানুষকে বহন করতে সক্ষম, এমন কোনো নভোযান এত দূর যায়নি। ভবিষ্যতে এই ওরিয়ন ক্যাপসুলে করেই চাঁদে ফিরবে মানুষ। ২০২৫ সাল বা তার আগেই চন্দ্রপৃষ্ঠে একজন নারী ও একজন পুরুষ পা রাখবেন।