সাজা ঘোষণার আগে সাক্ষাৎকার দিলেন ট্রাম্প
ঘুষের তথ্য ব্যবসায়িক নথিপত্রে গোপনের মামলায় সাজা ঘোষণার আগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার নিয়েছে নিউইয়র্কের প্রবেশন পরিষেবা।
গতকাল সোমবার ট্রাম্পের এই প্রাক্-সাজা সাক্ষাৎকার নেন এক প্রবেশন কর্মকর্তা। ৩০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে সাক্ষাৎকারটি শেষ হয়। মামলা-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এই তথ্য জানায়। মামলায় আগামী ১১ জুলাই ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করা হবে।
প্রবেশন সাক্ষাৎকারের আগের দিন রোববার লাস ভেগাসে একটি সমাবেশ করেন আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ট্রাম্প। সমাবেশে তাঁর সমর্থকেরা উপস্থিত ছিলেন।
মামলায় দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে নিয়মমাফিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রবেশন সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এটি সাজা ঘোষণা প্রক্রিয়ার একটি অংশ।
প্রবেশন সাক্ষাৎকারে সাধারণত দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির অতীত অপরাধের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাঁর পরিবার ও চাকরির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তাঁর মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। সাক্ষাৎকারের আলোকে একটি প্রাক্-সাজা প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট বিচারকের কাছে পাঠানো হয়।
মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, সাধারণত নিউইয়র্কের আদালতে ব্যক্তিগত উপস্থিতির মধ্য দিয়ে প্রবেশন সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। কিন্তু ট্রাম্পকে তা করতে হয়নি। তিনি ফ্লোরিডায় তাঁর মার-এ-লাগো রিসোর্টে বসে ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রবেশন সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
ট্রাম্পের যোগাযোগ পরিচালক স্টিভেন চেউং বলেছেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তাঁর আইনি দল এই মামলার রায় চ্যালেঞ্জ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
ট্রাম্প প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
দীর্ঘ পাঁচ সপ্তাহের শুনানির পর গত ৩০ মে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেন নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের একটি আদালত। মামলায় আনা ৩৪টি অভিযোগের সব কটিতে দোষী সাব্যস্ত হন ট্রাম্প।
মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৬ সালে পর্ন তারকা স্টর্মির সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে স্টর্মিকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেন তাঁর আইনজীবী মাইকেল কোহেন। তবে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক নথিতে এই তথ্য গোপন করা হয়েছিল।
মিলওয়াকিতে রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনের কয়েক দিন আগে ১১ জুলাই ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করা হবে। এই সম্মেলনে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হবে।
ট্রাম্প যেসব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাতে তাঁর সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাবেক একজন প্রেসিডেন্ট হওয়ায় এবং বয়স বিবেচনায় ট্রাম্পকে কারাদণ্ড না দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অবশ্য মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, এই মামলায় ট্রাম্পের যদি কারাদণ্ড হয়, তারপরও তাঁর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না।