ট্রাম্পের কণ্ঠে উল্টো সুর: ৬ লাখ চীনা শিক্ষার্থীকে ভিসা দেওয়ার ঘোষণা
নিজের আগের নীতি থেকে সরে এসে কেন ছয় লাখ চীনা শিক্ষার্থীকে ভিসা দিচ্ছেন, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন (মাগা)’ শিবিরের সমর্থকেরা তাঁর এ সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
গত রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ডেইলি কলারকে ট্রাম্প বলেন, ভিসা বাতিল করা ‘অপমানজনক’ হবে। তাঁর এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের ছোট ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো লাভবান হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়া নিয়ে কয়েক মাস ধরে ট্রাম্প প্রশাসন কঠোর অবস্থানে ছিল। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে ঘুরে এখন চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাম্প। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক করা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা চলছে।
ট্রাম্প তাঁর অবস্থানের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে বলেছেন, চীনা শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য অর্থ নিয়ে আসবেন। এ ছাড়া তাঁদের ভিসা দেওয়া না হলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়বে।
ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের কিছু ‘মাগা’ সমর্থক তাঁর ভিসাসংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত নিয়ে রাগ ও সংশয় প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প সমর্থক ফক্স নিউজের উপস্থাপক লরা লুমার বলেন, ‘এটা বুঝে ওঠা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।’
লরা লুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে আরও লেখেন, ‘কেউ না, আমি আবারও বলছি, কেউই চায় না যুক্তরাষ্ট্রে আরও ছয় লাখের বেশি চীনা শিক্ষার্থীর নামে কমিউনিস্ট গুপ্তচর উপস্থিত হোক।’
এদিকে ট্রাম্প তাঁর অবস্থানের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে বলেছেন, চীনা শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য অর্থ নিয়ে আসবেন। এ ছাড়া তাঁদের ভিসা দেওয়া না হলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়বে।
কেউ না, আমি আবারও বলছি, কেউই চায় না যুক্তরাষ্ট্রে আরও ছয় লাখের বেশি চীনা শিক্ষার্থীর নাম করে কমিউনিস্ট গুপ্তচর উপস্থিত হোক।লরা লুমার, ফক্স নিউজের উপস্থাপক
দক্ষিণপন্থী সংবাদমাধ্যম ডেইলি কলারকে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘(চীনা) প্রেসিডেন্ট সি এর সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। আমার মনে হয়, যখন আপনি কোনো দেশকে এটা বলেন যে আমরা আপনার শিক্ষার্থীদের নেব না, সেটা তাঁদের জন্য খুবই অপমানজনক।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আপনি জানেন, চীনের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এখন চীন আমাদের অনেক অর্থ দিচ্ছে। তারা আমাদের শত কোটি ডলার দিচ্ছে।’
অথচ গত মে মাসেই ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছিলেন, তিনি চীনে শিক্ষার্থী ভিসা দেওয়া কঠোরভাবে বাতিল করবেন, বিশেষ করে ‘যাঁদের চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সংযোগ রয়েছে বা যাঁরা স্পর্শকাতর বিষয়ে পড়াশোনা করছেন।’
এমন একসময় চীনা শিক্ষার্থীদের মার্কিন ভিসা দেওয়ার ঘোষণা এল, যখন ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকিসহ নানা কারণে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে চীনের নেতৃত্বে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক যুদ্ধে বর্তমানে বিরতি চলছে।
হোয়াইট হাউস বলেছে, আগামী দুই বছর চীনা শিক্ষার্থীদের এ ছয় লাখ ভিসা দেওয়া হবে। আগের বছরগুলোর সঙ্গে ভিসা প্রদানের এ সংখ্যায় সামঞ্জস্য রয়েছে।
ডেইলি কলারকে ট্রাম্প বলেন, চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়ার বিনিময়ে তিনি কিছুই চান না। তিনি বলেন, ‘না, আমি মনে করি, আমরা যা করছি, তা সঠিক। নানা দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা ভালো। আপনি জানেন, এটা ক্ষতিকর নয়; বিশেষ করে পরমাণু শক্তিধর দেশের সঙ্গে।’