যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবকে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা

যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ বাড়ছে
ছবি: এএফপি

মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবকে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর রয়টার্সের।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যবিষয়কমন্ত্রী জাভিয়ের বেসেরা স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার এ কথা জানান।

জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণার ফলে দেশটিতে মাঙ্কিপক্স মোকাবিলায় অতিরিক্ত তহবিলের পাশাপাশি সরঞ্জাম সরবরাহের পথ সুগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত বুধবার নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৬০০ জন ছাড়িয়ে যায়। শনাক্ত হওয়া রোগীদের প্রায় সবাই সমকামী পুরুষ।

জাভিয়ের বেসেরা এক ব্রিফিংয় বলেন, ‘এই ভাইরাস মোকাবিলায় আমাদের পদক্ষেপ পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে আমরা প্রস্তুত। মাঙ্কিপক্সকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে প্রত্যেক আমেরিকানের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুন

একই ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরিচালক রোচেল ওয়ালেনস্কি বলেন, জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণার ফলে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের তথ্য-উপাত্ত প্রাপ্তি বাড়বে। রোগটি মোকাবিলায় এই তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজন রয়েছে।

মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব সামাল দেওয়া নিয়ে চাপে আছে মার্কিন সরকার। দেশটিতে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ছড়ানোর আগে ইউরোপে রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। কিন্তু এখন বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রেই সবচেয়ে বেশি মাঙ্কিপক্সের রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে মাঙ্কিপক্সের টিকা ও চিকিৎসাসেবা অপর্যাপ্ত বলে খবরে বলা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত মাসে মাঙ্কিপক্সকে ‘আন্তর্জাতিক উদ্বেগের জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করে। এটি সংস্থাটির সর্বোচ্চ সতর্কতার মাত্রা।

ভাইরাসটি মোকাবিলায় সমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপের পাশাপাশি টিকা ও চিকিৎসার জন্য তহবিল ছাড় সহজ করার লক্ষ্যে এই ঘোষণা দেয় ডব্লিউএইচও।

মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে গুটিবসন্ত জন্য অনুমোদিত টিকা ও চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে দেশগুলো। পাশাপাশি মাঙ্কিপক্স নিয়ে পৃথকভাবে কাজ চলছে।

মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসায় দুটি কোম্পানির ৬ লাখ ১৪ হাজার টিকা সরবরাহ করেছে মার্কিন সরকার। তবে ইতিমধ্যে কতগুলো টিকা দেওয়া হয়েছে, সে তথ্য দেওয়া হয়নি।

ওয়ালেনস্কি বলেন, উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ১৬ লাখের বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।

আরও পড়ুন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ১৯৫৮ সালে প্রথমবারের মতো বানরের শরীরে এই রোগ শনাক্ত হয়।

মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে জ্বর, ব্যথা, ত্বকে পুঁজ-ভরা ফুসকুড়ির মতো উপসর্গ দেখা যায়। আক্রান্ত লোকজন দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে সেরে ওঠে। ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শে এ রোগ ছড়ায়। এ রোগে মৃত্যুর হার খুবই কম।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিকিৎসাবিষয়ক মুখ্য উপদেষ্টা অ্যান্থনি ফাউসি গতকাল বলেন, মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবের লাগাম টেনে ধরার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সমকামী সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলা জরুরি। তবে কারও জীবনাচারকে দোষারোপ করার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। সংকট মোকাবিলায় জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা সব সময় সফল প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।