মেক্সিকোতে অবৈধ অস্ত্র জমা দিলে টাকা দেবে সরকার

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাউমছবি: রয়টার্স

মেক্সিকোর সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধারে নতুন পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার। সহিংস অপরাধ কমাতে দেশের নাগরিকদের নিরস্ত্র করাটা জরুরি মনে করছে তারা। তাই, তাঁদের কাছ থেকে মেশিনগান ও অ্যাসাল্ট রাইফেলসহ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।

গত সোমবার প্রকাশিত মেক্সিকোর সরকারি গেজেটে আর্থিক প্রণোদনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন গির্জায় সরকারি কর্মকর্তারা আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছ থেকে এই অস্ত্র সংগ্রহ করবেন।

গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, রিভলভার জমা দিলে ৮ হাজার ৭০০ পেসো (৪৩০ ডলার), একে–৪৭ রাইফেল জমা দিলে ২৫ হাজার পেসো (১ হাজার ২০০ ডলার) এবং মেশিনগান জমা দিলে ২৬ হাজার ৪৫০ পেসো (১ হাজার ৩০০ ডলার) দেওয়া হবে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাউম গত মাসে এক বক্তব্যে দেশের নাগরিকদের ‘নিরস্ত্রের প্রতি হ্যাঁ, শান্তির প্রতি হ্যাঁ’ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। দ্বিধায় আছেন এমন নাগরিকদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, তাঁরা যদি অস্ত্র ত্যাগ করে, তাহলে তাদের বিচার করা হবে না।

প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া বলেন, মানুষকে স্বেচ্ছায় অস্ত্র সমর্পনের কাজের সুযোগ করে দিতে সরকার দেশের বিভিন্ন গির্জায় কেন্দ্র বানাচ্ছে। সেখানে গিয়ে মানুষ আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিতে পারবে এবং এ জন্য তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হবে।

এক সময় ৯০ লাখ মানুষের নগর মেক্সিকো সিটির মেয়র ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা মেক্সিকো সিটিতে এই কর্মসূচি চালু করেছিলাম এবং এতে ভালো ফল পাওয়া গেছে।’

শত শত কোটি ডলারের অবৈধ মাদক বাণিজ্য ঘিরে মেক্সিকো সহিংস অপরাধে নিমজ্জিত হয়ে আছে।

মেক্সিকোর জাতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের প্রাথমিক তথ্য–উপাত্ত থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালে দেশটিতে ৩১ হাজার ৬২ মানুষ খুন হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষ খুন হয়েছেন আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে।

মেক্সিকোতে অস্ত্র কেনাবেচা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ফলে সে দেশে বাস্তবিক অর্থে বৈধভাবে অস্ত্র সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব একটা কাজ। দেশটির সরকার যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে সীমান্তে অস্ত্র পাচার মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে বার বার ওয়াশিংটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।