যুক্তরাষ্ট্রের ইউসিএলএ ক্যাম্পাসে সহিংসতা: ‘বিলম্বিত’ সাড়ার জন্য পুলিশের সমালোচনা

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ) ক্যাম্পাসে মুখোশধারী ইসরায়েলপন্থী একটি গোষ্ঠী গত মঙ্গলবার রাতে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের শিবিরে হামলা চালায়ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ) ক্যাম্পাসে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের বিলম্বিত সাড়ার সমালোচনা করেছেন অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের কার্যালয়।

ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকার আগে মুখোশধারী ইসরায়েলপন্থী একটি গোষ্ঠী গত মঙ্গলবার রাতে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের শিবিরে হামলা চালায়।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজমের মুখপাত্র বলেছেন, সহিংসতার এ ঘটনায় পুলিশের সীমিত ও বিলম্বিত হস্তক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য।

তবে গতকাল বুধবার ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে শত শত পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন ছিলেন।

অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তারা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা বলেছেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতের ঠিক আগে ক্যাম্পাসে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তখনই তাঁরা ক্যাম্পাসের ডিকসন প্লাজায় নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করেছিলেন। এখানেই বিক্ষোভকারীরা তাঁবু খাটিয়েছেন।

তবে ঘটনাস্থলে থাকা বেশ কয়েকজন বলেছেন, আইন প্রয়োগকারীরা যথেষ্ট দ্রুত কাজ করেননি।

ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটানোয় যুক্ত একটি গোষ্ঠী ইউসি ডাইভেস্ট অ্যাট এলএ এক বিবৃতিতে বলেছে, আইন প্রয়োগকারীরা কেবল লনের প্রান্তে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিলেন। কিন্তু আইন প্রয়োগকারীরা আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য ইউসিএলএ ও লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগের (এলএপিডি) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বিবিসি।

হামলা শুরুর প্রায় দুই ঘণ্টা পর বিক্ষোভকারীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে শুরু করেন। বুধবার সকালে ক্যাম্পাসে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে পুলিশ।

নিজ কার্যালয়ের বিবৃতির বাইরে গভর্নর নিউজম তাঁর এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে ইউসিএলএ ক্যাম্পাসে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন।

গভর্নর নিউজম বলেন, আইন স্পষ্ট। বাক্স্বাধীনতার অধিকার সহিংসতা, ভাঙচুর বা অরাজকতাকে প্ররোচিত করে না।

গভর্নর বলেন, দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই ফৌজদারি বিচার, সাময়িক বরখাস্ত বা বহিষ্কারের মাধ্যমে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

আইন প্রয়োগকারী সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের কাছে মাত্র কয়েকজন ইউসিএলএ পুলিশ অফিসার ছিলেন। কিন্তু সংঘর্ষ বাধলে তাঁরা পিছু হটেছিলেন। কারণ, তাঁরা সংখ্যায় খুব কম ছিলেন।

সংবাদপত্রটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্যালিফোর্নিয়া হাইওয়ে টহল ও লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে অতিরিক্ত আইনপ্রয়োগকারী বাহিনী ডাকা হয়েছিল। পরে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিন ঘণ্টা লাগে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁবু খাঁটিয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা। পাল্টায় হিসেবে ইসরায়েলে হামাসের হামলার প্রতিবাদে কয়েক দিন ধরে কর্মসূচি পালন করছিলেন ইসরায়েলপন্থী শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।