শান্তি আলোচনায় ‘কার্ড’ রাশিয়ার হাতে: বিবিসিকে ট্রাম্প

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (বাঁয়ে) ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জাপানের ওসাকায় জি–২০ সম্মেলনের ফাঁকে, ২৮ জুন, ২০১৯ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেন যুদ্ধে ইতি টানার জন্য কোনো শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে ‘কার্ড’ রাশিয়ার হাতে রয়েছে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখানে কার্ড বলতে নিয়ন্ত্রণকে বুঝিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, রাশিয়া এরই মধ্যে ইউক্রেনের অনেক ভূখণ্ড নিজেদের দখলে নিয়েছে। তাই এমন ধারণা তাঁর।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গতকাল বুধবার ফ্লোরিডায় সৌদি আরব-সমর্থিত বিনিয়োগসংক্রান্ত একটি আলোচনা শেষে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে যাওয়ার পথে ওই সাক্ষাৎকার দেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, তাঁর বিশ্বাস মস্কো এই যুদ্ধের শেষ দেখতে চায়। তিন বছর আগে ইউক্রেনে পুরোদমে অভিযান শুরু করেছিল রাশিয়া।

আরও পড়ুন

ফ্লোরিডার বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন ট্রাম্প। এ নিয়ে এক দিনে দুবার জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক বলেন তিনি। গতকাল সকালেই ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর জন্য দৃশ্যত জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ বলেন তিনি। তাঁর ওই প্রতিক্রিয়া ছিল আগের দিন জেলেনস্কির এক বক্তব্যের জেরে। সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার বৈঠকে ইউক্রেনকে না নেওয়ায় অসন্তোষ জানিয়ে জেলেনস্কি বলেছিলেন, রাশিয়া পরিচালিত ‘অপতথ্যের জগতে বাস করছেন’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (বাঁয়ে) ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউইয়র্ক সিটির ট্রাম্প টাওয়ারে, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ছবি : রয়টার্স

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে বসে বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি রাশিয়া যুদ্ধের ইতি টানতে চায়, আমি আসলেই তা বিশ্বাস করি। আমার মনে হয়, তাদের হাতে অল্প কিছু কার্ড আছে। কারণ তারা অনেক ভূখণ্ড দখলে নিয়েছে। তাদের হাতে কার্ড আছে।’ রাশিয়া শান্তি চায়—এ কথা তিনি বিশ্বাস করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি বিশ্বাস করি।’

আরও পড়ুন

এর আগে ফ্লোরিডায় ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি (জেলেনস্কি) নির্বাচন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ইউক্রেনের প্রকৃত জরিপে তাঁর জনপ্রিয়তা তলানিতে। প্রতিটি শহরই যখন ধ্বংস করা হচ্ছে, তখন আপনার জনপ্রিয়তা কীভাবে বেশ ভালো হতে পারে?’

ইউক্রেনে জেলেনস্কি সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদ ২০২৪ সালের মে মাসে শেষ হয়েছে। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর দেশটিতে সামরিক আইন জারি করা হয়। তখন থেকে সেখানে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, ইউক্রেনে জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু চলতি মাসে চালানো জরিপ অনুযায়ী বিবিসি দেখেছে যে ৫৭ শতাংশ মানুষের জেলেনস্কির প্রতি আস্থা রয়েছে।

আরও পড়ুন
সৌদি আরবের রিয়াদে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে এই প্রথম দুই দেশের নেতারা বৈঠকে বসেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
ছবি: রয়টার্স

এদিকে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরশাসক’ আখ্যা দেওয়ার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইউরোপের নেতারা। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং তাঁর গণতান্ত্রিক বৈধতাকে অস্বীকার করা একেবারে ভুল ও ভয়ংকর।’ আর এক ফোনকলে জেলেনস্কিকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

আরও পড়ুন