নির্বাচনে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ মামলার বিচার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (৭৭) নির্বাচনে হস্তক্ষেপের মামলার বিচার কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার ফেডারেল বিচারক তানিয়া চুটকান এই আদেশ দেন।

এমন সময় এই ঘটনা ঘটল, যখন ট্রাম্পের করা আপিল নিয়ে আদালতে শুনানি চলছিল। এই মামলার বিচারকাজ আগামী ৪ মার্চ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। অভিযোগ ওঠে, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই নির্বাচনে ফলাফল বদলে দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি—রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, দাপ্তরিক কাজে বাধা দেওয়ার ষড়যন্ত্র, দাপ্তরিক কাজে বাধাদান ও নাগরিক অধিকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। গত বছর তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছিল। ট্রাম্প চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর দল রিপাবলিকান থেকে আবার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে দৌড়ে এগিয়ে আছেন।

তবে ট্রাম্পের আইনজীবীদের যুক্তি, তাঁদের মক্কেলকে এই ধরনের ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগের মুখোমুখি করা উচিত হবে না। কারণ, ঘটনার সময় তিনি প্রেসিডেন্ট পদে আসীন ছিলেন। প্রেসিডেন্ট পদে থাকা অবস্থায় ব্যক্তি এ ধরনের দায় থেকে মুক্তি পাবেন কি না—বর্তমানে তা যাচাই করে দেখছেন দেশটির ফেডারেল আপিলের তিন সদস্যের একটি প্যানেল। আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে এ বিষয়ে রুল আসতে পারে।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, আপিল প্রক্রিয়া চলার কারণে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ মামলার কার্যক্রম আবার শুরু হতে কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে। এ ছাড়া ধারণা করা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার সমাপ্তি ঘটে যাবে। কারণ, মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে ৬-৩ ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা।

বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা থেকে ট্রাম্প দায়মুক্তি পেলে, তা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে থাকা ব্যক্তির ওপর গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, তিনি অন্যায় কিছু করেননি। তিনি বিচার বিভাগ ও বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নিপীড়নের অভিযোগ করে আসছেন।

এই চারটির বাইরে ট্রাম্প আরও তিনটি ফৌজদারি মামলার বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এর একটি হলো ’২০–এর নির্বাচনে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়াসংক্রান্ত। দ্বিতীয় অভিযোগ হলো, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার সময় দাপ্তরিক কিছু গোপনীয় নথি সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে গেছেন। তৃতীয় অভিযোগ, তিনি পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলের মুখ বন্ধ রাখতে ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় ঘুষ দিয়েছিলেন। এই মামলার বিচারকাজ আগামী ২৫ মার্চ নিউইয়র্কে শুরু হবে বলে দিন ঠিক করা আছে। নির্বাচনে হস্তক্ষেপ মামলার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে ক্ষেত্রে স্টর্মির মামলাই হবে ট্রাম্পের ক্ষেত্রে প্রথম ফৌজদারি বিচারকাজ।