নিউইয়র্কে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে রিপাবলিকান স্পিকার

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন মাইক জনসন, ২৪ এপ্রিলছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউইয়র্কের ক্যাম্পাসে গিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন। গতকাল বুধবার তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানহাটান ক্যাম্পাস পরিদর্শনে যান।

গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ চলছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থীও তাঁবু খাটিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। বিক্ষোভ বন্ধ করতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সমঝোতায় পৌঁছাতে শিক্ষার্থীদের ৪৮ ঘণ্টা অর্থাৎ আগামীকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

চলমান এই উত্তেজনার মধ্যে গতকাল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে যান জনসন। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার বলেন, ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতির শিকার কয়েকজন ইহুদি শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা করতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢোকার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাঁকে দেখে হট্টগোল শুরু করেন। তবে তাতে গুরুত্ব না দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন জনসন।

জনসন অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে লাউড স্পিকার ব্যবহার করেননি, মাইক্রোফোনে কথা বলেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে দেওয়া বক্তব্যে জনসন বলেন, কলাম্বিয়া কর্তৃপক্ষ যেহেতু এসব আইন অমান্যকারী উগ্রপন্থী এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে দিয়েছে, তখন অন্য ক্যাম্পাসেও ইহুদিবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়েছে।

সহিংস বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করার আহ্বান জানিয়েছেন জনসন। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ জারি করতে ব্যর্থ হবে, সেগুলোকে কেন্দ্রীয় তহবিল বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন তিনি।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রায় ৪০ ইহুদি শিক্ষার্থীর সঙ্গে দেখা করেন জনসন।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বিদ্যালয়েও বিক্ষোভ ও ধরপাকড়ের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল অস্টিনে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের ওপর চড়াও হয় টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের টহল সেনা ও পুলিশ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে টেক্সাসের জননিরাপত্তা বিভাগের দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, ৩৪ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস বন্ধ করে দিয়েছে। তারা লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগকে বিক্ষোভস্থল ফাঁকা করে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে একে একে আত্মসমর্পণ করেন এবং পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। কয়েক ঘণ্টা পর ক্যাম্পাসে পুলিশ একটি বিক্ষোভ শিবির উচ্ছেদ করে দেয়।

গতকাল রাতে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছে, অনুপ্রবেশের দায়ে ৯৩ জনকে এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র বহনের দায়ে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় কারও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এ ছাড়া রোড আইল্যান্ডের প্রভিডেন্স শহরের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়, অ্যান আরবারে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়, কেমব্রিজে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং হামবোল্টে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেছেন।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন ইসরায়েলি জিনিসপত্র বর্জন করে এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে চেষ্টা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দেয়।

আরও পড়ুন