৪০০ কোটি ডলার নিয়ে উধাও ‘ক্রিপ্টোকুইন’ এখনো রহস্য

২০১৬ সালে লন্ডনের ওয়েম্বলি অ্যারেনায় রুজা ইগনাতোভাছবি: ক্রিপ্টোকুইন ফেসবুক থেকে

লাল–কালো গাউনে মঞ্চে এলেন রুজা ইগনাতোভা। চারদিকে আলোর রোশনাই। বেজে উঠল অ্যালিসিয়া কিসের ‘গার্ল অন ফায়ার’ গানটি। ইগনাতোভা ঘিরে লন্ডনের ওয়েম্বলি অ্যারেনায় সেই গানে সুরে সুর মেলাল উল্লসিত জনতা। সবাইকে ধন্যবাদ জানালেন তিনি।

সেটা ছিল ২০১৬ সালের জুনের ঘটনা। তখন দুনিয়াজুড়ে ডিজিটাল অর্থ হিসেবে পরিচিত ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে বেশ মাতামাতি। এ খাতে বিনিয়োগে অনেকের ব্যাপক আগ্রহ ছিল। রুজা তখন নিজেকে ‘ক্রিপ্টোকুইন’ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, তাঁর প্রতিষ্ঠান ওয়ানকয়েন হচ্ছে বিটকয়েনের প্রতিদ্বন্দ্বী। বলেছিলেন, দুই বছরের মধ্যে মানুষ বিটকয়েনকে ভুলে যাবে। তাঁর কথায় বিনিয়োগকারীরা হাততালি ও শিস দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।

ঠিক ১৬ মাস পর রুজা বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ার উদ্দেশে উড়োজাহাজে চড়ে বসেছিলেন। আর এরপরই তিনি ‘নাই’ হয়ে যান। এখনো তাঁর কোনো হদিস নেই।

কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওয়ানকয়েন প্রতারণার মাধ্যমে ৪০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। রুজা যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের তাঁর প্রতিষ্ঠানে অর্থ বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে পেরেছিলেন। ফেডারেল প্রসিকিউটরের ভাষ্য, ওয়ানকয়েন এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বড় বড় আর্থিক জালিয়াতির মধ্যে অন্যতম।

শুরু থেকেই রুজা জানতেন, এটি জালিয়াতি

২০১৭ সালের অক্টোবরে রুজা পালানোর পর থেকে তাঁর ছবি এফবিআইয়ের ওয়েবসাইটে ঝুলছে। বিশ্বব্যাপী বড় বড় গণমাধ্যমেও তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন কম হয়নি। ইউরোপেও শীর্ষ অপরাধীর তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে।

এফবিআই রুজাকে নিয়ে যে পোস্টার করেছে, তার নিচে লেখা রয়েছে রুজা সশস্ত্র পাহারায় অথবা সহযোগীদের নিয়ে চলাফেরা করে থাকতে পারেন। তিনি হয়তো প্লাস্টিক সার্জারি করিয়ে তাঁর চেহারা পাল্টে ফেলেছেন।

এফবিআই জানায়, অপরাধের দীর্ঘ তালিকা ও ভয়াবহতার ওপর ভিত্তি করে অপরাধীর তালিকা তৈরি করা হয়। রুজার বিষয়ে আদালতের নথির বাইরে এফবিআই সিএনএনকে অতিরিক্ত তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। নিউইয়র্কে এফবিআইয়ের মুখপাত্র ড্যানিয়েল ক্রিফো বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে যা এসেছে, তার বাইরে আমরা মন্তব্য করতে পারছি না।’

রুজা এখন এফবিআইয়ে ১০ শীর্ষ তালিকাভুক্ত অপরাধীদের একজন
ছবি: এফবিআই

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, রুজা ও ওয়ানকয়েনের  সহপ্রতিষ্ঠাতা কার্ল সেবাস্তিয়ান গ্রিনউড শুরু থেকেই জানতেন, তাঁদের উচ্চাভিলাষী এ উদ্যোগ হচ্ছে একটি পঞ্জি স্কিম, যেটা প্রতারণামূলক। এতে নতুন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ পুরোনো বিনিয়োগকারীদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

আইআরএস স্পেশাল এজেন্ট জন আর তাফুর এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার জন্যই ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ানকয়েনের জন্ম।

ফেডারেল কর্মকর্তারা আদালতে দেওয়া এক প্রতিবেদনে জানান, গ্রিনউড ও রুজা যখন ওয়ানকয়েন নিয়ে কাজ করছিলেন, তাঁরা ই–মেইল যোগাযোগে এটিকে ‘মূল্যহীন মুদ্রা (ট্র্যাশি কয়েন)’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। নথিপত্রে দেখা যায়, রুজার ভাই কনস্ট্যান্টিন ইগনাতোভকে পাঠানো ই-মেইলে গ্রিনউড বিনিয়োগকারীদের ‘বোকা’ ও ‘উন্মাদ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। আইনজীবীদের ভাষ্যমতে, কনস্ট্যান্টিন নিজেও এ কেলেঙ্কারির অংশ। বোনের অনুপস্থিতিতে এখন তিনিই ওয়ানকয়েন পরিচালনা করছেন।

রুজা ২০১৪ সালে গ্রিনউডকে দেওয়া এক ই–মেইলে কোম্পানি ব্যর্থ হলে সেখান থেকে বের হওয়ার কৌশল কেমন হবে, তা লিখেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের অর্থ সংগ্রহের বিষয়টি চালিয়ে যাওয়া উচিত এবং এর দায় চাপাতে হবে অন্যদের কাঁধে।’

রুজা ইগনাতোভা
ছবি: ইউএস অ্যাটর্নি অফিসের টুইটার থেকে

রুজা এখন এফবিআইয়ে ১০ শীর্ষ তালিকাভুক্ত অপরাধীদের একজন এবং একমাত্র নারী। ১৯৫০ সালে এফবিআই এ তালিকা চালুর পর তালিকায় পলাতক ৫২৯ শীর্ষ অপরাধীর নাম আসে। তাঁদের মধ্যে রুজাসহ নারীর সংখ্যা মাত্র ১১ জন।

নিউইয়র্কের শীর্ষ আইনজীবী ও মার্কিন অ্যাটর্নি ডেমিয়ান উইলিয়ামস বলেছিলেন, রুজা ও তাঁর সহযোগীরা মানুষকে বুঝিয়েছিলেন, তাঁদের ওয়ানকয়েন ভবিষ্যতে বিটকয়েনকে শেষ করে দেবে। বাস্তবে ওয়ানকয়েন ছিল মূল্যহীন...। (তাদের) এ মিথ্যা বলার একটাই লক্ষ্য ছিল। আর তা হলো বিশ্বের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ প্রতিদিন এখানে বিনিয়োগ করানো।

ছোট থেকেই ধনী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা

বর্তমানে ৪২ বছর বয়সী রুজা জার্মান নাগরিক। যদিও তাঁর জন্ম বুলগেরিয়ায়। সেখানেই তাঁর মা–বাবা থাকেন। বাবা একজন প্রকৌশলী ও মা শিক্ষক। লেখক জেমি বারলেট তাঁর ‘দ্য মিসিং ক্রিপ্টোকুইন’ বইয়ে রুজার সাধারণ অবস্থা থেকে শুরু করে উদ্যোক্তা জগতের তারকায় পরিণত হওয়ার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।

রুজা বলতেন ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই তিনি কোটিপতি হতে চান
ছবি ওয়ানকয়েন–এর ফেসবুক থেকে

বারলেট লিখেছেন, রুজার কিশোর বয়সে তাঁর পরিবার জার্মানিতে চলে আসে। তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। অবসরে তিনি পড়াশোনা করতেন, দাবা খেলতেন। সহপাঠীদের ভাষ্যমতে, রুজা স্মার্ট, উচ্চাকাক্ষী ও চুপচাপ স্বভাবের ছিলেন।

রুজা জার্মানির কনসতান্‌জে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি পেয়েছিলেন। সেখানে আইনের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে তাঁর সঙ্গেই বিয়ে হয়। কিন্তু তিনি কখনো সন্তান চাননি। কারণ, সন্তান তাঁর অর্থসম্পদ অর্জনের পথে বাধা হতে পারে বলে তাঁর ভয় ছিল। তিনি সবাইকে বলতেন, ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই তিনি কোটিপতি হতে চান। বারলেট লিখেছেন, ‘তিনি (রুজা) ধনী হতে মরিয়া ছিলেন। এমনকি কীভাবে অর্থ উপার্জন করা যায়, তা জানতে বইয়ে বুঁদ হয়ে থাকতেন।’

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোপীয় আইনে পড়াশোনা শেষে রুজা সোফিয়ায় আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা পরামর্শ ফার্ম ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানিতে পরামর্শক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে মক্কেলদের বেশ অস্থাভাজন ছিলেন তিনি। তিনি রুশ, জার্মান, ইংরেজি ও বুলগেরিয়ান ভাষায় বেশ দক্ষ ছিলেন। এ কারণে সহজেই তিনি মক্কেলদের সঙ্গে মিশে যেতে পারতেন।

সবার সামনে কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করবেন, তা রুজার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি প্রায়ই সন্ধ্যায় গাউন ও উজ্জ্বল লাল লিপস্টিক ও কানে হীরার দুল পরে নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন। বারলেট লিখেছেন, সবকিছুতেই গ্ল্যামার ও সাফল্য ফুটিয়ে তুলতেন তিনি।

বিনিয়োগকারীদের ৫ থেকে ১০ গুণ লাভের প্রতিশ্রুতি

২০১৪ সালে ইগনাতোভা ও তাঁর সহপ্রতিষ্ঠাতা গ্রিনউড ইউরোপ, নিউইয়র্কসহ বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ওয়ানকয়েন ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন। এফবিআইয়ের অভিযোগ অনুযায়ী, তাঁরা অনলাইন ওয়েবিনারে সম্মেলনের আয়োজন করতেন। সেখানে তাঁরা সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের ওয়ানকয়েন প্যাকেজ কিনতে একটি অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা দেওয়ার অনুরোধ করতেন।

ফেডারেল প্রসিকিউটররা বলেন, ওয়ানকয়েন বহুস্তর বিপণন (এমএলএম) নেটওয়ার্ক হিসেবে পরিচালিত হতো। বিনিয়োগকারীরা ক্রিপ্টোকারেন্সি প্যাকেজে অন্য বিনিয়োগকারী আনলে কমিশন পেতেন। আদালতের নথি অনুযায়ী, এ জন্য তাঁরা বিনিযোগকারীদের ৫ থেকে ১০ গুণ লাভ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

রুজা ইগনাতোভা
ছবি ওয়ানকয়েন–এর ফেসবুক থেকে

ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাকাটায় উন্মাদনা শুরু হয়। ফেডারেল আইনজীবীরা বলেন, কেবল ২০১৪ সালের শেষ তিন মাস ও ২০১৬ সালের শেষ তিন মাস ওয়ানকয়েনে ৪০০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ হয়। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এসেছে পাঁচ কোটি ডলারের বিনিয়োগ।

ম্যানহাটনের এক শীর্ষ ফেডারেল আইনজীবী উইলিয়ামস বলেন, ক্রিপ্টোকারেন্সির শুরুর দিকের বিপুল জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নিখুঁতভাবে নিজের পরিকল্পনা আঁটেন রুজা।

ফেডারেল প্রসিকিউটররা বলেন, ওয়ানকয়েন অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো নয়। আদালতের নথিতে বলা হয়, ওয়ানকয়েন একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। এর কোনো শক্তিশালী সার্ভার ছিল না।

ফেডারেল আইনজীবীরা বলেন, ২০১৪ সালের আগস্টে গ্রিনউডকে লেখা এক ই-মেইলে রুজা লিখেছিলেন, ‘আমরা আসলে মূল্যবান কিছু করছি না, মানুষকে গালগল্প বলছি।’

প্রসিকিউটররা বলেন, ওয়ানকয়েনের মূল্য অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো বাজারের সরবরাহ এবং চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ছিল না। ওয়ানকয়েন নিজেই নিজের মূল্য দাঁড় করিয়েছে।

তারপর সব ভেঙে পড়ল

আদালতের নথি বলছে, ২০১৬ সালে ওয়ানকয়েনের মুখোশ খুলতে শুরু করে। সে সময় বিনিয়োগকারীরা তাঁদের মূল বিনিয়োগ তুলে নিতে ওয়ানকয়েনস বিক্রি করতে গেলে বেশ বেগ পেতে হয়। তখন অনলাইন ছড়িয়ে পড়ে, এ ব্যবসা আসলে একটি প্রতারণা। গণমাধ্যম এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করল। আন্তর্জাতিক ও মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা বিষয়টি তদন্ত শুরু করেন।

২০১৯ সালের মার্চে রুজার ভাই কনস্ট্যান্টিন ইগনাতোভ গ্রেপ্তার হন
ছবি কনস্ট্যান্টিন ইগনাতোভের ইনস্টাগ্রাম থেকে

রুজার বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত কী হয়েছিল, তা পরিষ্কার নয়। কিন্তু এফবিআই বলছে, রুজা তাঁর মার্কিন প্রেমিকের বাসায় থাকার সময়ই জানতে পেরেছিলেন, ওয়ানকয়েনের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। আর প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড–সম্পর্কিত তথ্য দিয়ে তাঁর প্রেমিক তদন্তকারীদের সহযোগিতা করছেন।

২০১৭ সালের অক্টোবরে মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয় রুজার বিরুদ্ধে জালিয়াতি, জালিয়াতির ষড়যন্ত্র, নিরাপত্তা জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে। প্রতিটি অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর সর্বোচ্চ ২০ বছর করে কারাদণ্ড হতে পারে। এর আগেও তিনি জালিয়াতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তখন তাঁর সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। নিউইয়র্কের একটি ফেডারেল আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।

আদালতের নথি বলছে, রায়ের দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর রুজা বুলগেরিয়ার সোফিয়া থেকে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে গ্রিসের এথেন্সে চলে যান। এরপর থেকে তিনি ‘নিখোঁজ’। ব্যর্থ কোম্পানির দায় পড়ে ব্যবসায়িক অংশীদারদের ওপর।

এফবিআইয়ের ধারণা, রুজা এথেন্স থেকে জার্মান পাসপোর্টে সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, রাশিয়া হয়ে পূর্ব ইউরোপ গেছেন। এমনকি তিনি বুলগেরিয়ায়ও ফিরে থাকেত পারেন। তাঁকে ধরিয়ে দিতে পারলে এক লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

নিউইয়র্কে এফবিআইয়ের সহকারী পরিচালক-ইন-চার্জ মাইকেল ড্রিসকল সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি প্রচুর নগদ অর্থ নিয়ে গেছেন। অর্থ দিয়ে অনেক বন্ধু কেনা যায়। আমার ধারণা, তিনি এ অর্থের ব্যবহার করে সুবিধা নিচ্ছেন।’

রুজার ব্যবসায়িক অংশীদার কার্ল সেবাস্তিয়ান গ্রিনউড
ছবি: ইউএস অ্যাটর্নি অফিসের টুইটার থেকে

তবে রুজার ব্যবসায়িক অংশীদার গ্রিনউড ততটা ভাগ্যবান নন। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে থাইল্যান্ডের কো সামুই থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়। ওই বছরের ডিসেম্বরে তিনি জালিয়াতি, জালিয়াতির ষড়যন্ত্র এবং অর্থ পাচারের ষড়যন্ত্রের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। পরের বছরে এপ্রিলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনটি অভিযোগের প্রতিটিতে তাঁকে ২০ বছর করে কারাভোগ করতে হবে।

২০১৯ সালের মার্চে রুজার ভাই কনস্ট্যান্টিন ইগনাতোভ গ্রেপ্তার হন। তিনি ব্যবসার কাজে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ শেষে বুলগেরিয়ার উদ্দেশে ফিরতি ফ্লাইটে চড়তে গেলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। কনস্ট্যান্টিন জালিয়াতির ষড়যন্ত্র, অর্থ পাচার এবং জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

ইতিমধ্যে ওয়ানকয়েন প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ওয়েবসাইটও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। গ্রিসে নামার পাঁচ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও ‘ক্রিপ্টোকুইন’ রুজার অবস্থান এখনো রহস্যই রয়ে গেছে।