স্পাইওয়্যারের অপব্যবহারে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনছবি: এএফপি ফাইল ছবি

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর নতুন একটি নীতি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নতুন নীতির আওতায় বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। এই ভিসা নীতির আওতায় তাঁদের পরিবারের সদস্যরা, বিশেষ করে স্ত্রী-সন্তানেরাও থাকবেন।

গতকাল সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে এ নীতি ঘোষণা করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে দমন-পীড়ন, তথ্যের অবাধ প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের ক্রমবর্ধমান অপব্যবহার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের অপব্যবহার ব্যক্তির গোপনীয়তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংগঠনের অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছে। নির্বিচারে আটক, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো গুরুতর ঘটনার ক্ষেত্রে এ ধরনের স্পইওয়্যারের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। উপরন্তু এসব সরঞ্জামের অপব্যবহার মার্কিন নাগরিক ও কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা ও কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের জন্য হুমকি তৈরি করছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সব সময় মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার পাশে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়ে তারা সোচ্চার থাকবে।

ব্লিঙ্কেন বিবৃতিতে আরও বলেন, এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি অভিবাসন ও জাতীয় আইনের ধারা ২১২ (এ)(৩)(সি)-এর আওতায় প্রয়োগ করা হবে। এ ধারার আওতায় পররাষ্ট্র দপ্তর বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের অপব্যবহারের মাধ্যমে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, ভিন্নমতাবলম্বী হিসেবে বিবেচিত অন্যান্য ব্যক্তি, প্রান্তিক সম্প্রদায়ের সদস্য বা দুর্বল জনগোষ্ঠী বা এই লক্ষ্যবস্তু ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্বিচারে বা বেআইনিভাবে নজরদারি, হয়রানি, দমন বা ভয় দেখানোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উল্লেখিত বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের অপব্যবহার থেকে আর্থিক সুবিধা লাভ করতে পারে বলে মনে করা হয়—যার মধ্যে রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠান, যারা স্পাইওয়্যারের উন্নয়ন, নির্দেশনা বা পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে অথবা পরিপূর্ণভাবে তৈরি প্রযুক্তি সরকারের কাছে সরবরাহ করে বা সরকারের পক্ষ হয়ে কাজ করে—এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানও এর সঙ্গে জড়িত হিসেবে গণ্য হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, উল্লেখিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন। এ ক্ষেত্রে পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যদের মধ্যে স্বামী/স্ত্রী এবং যেকোনো বয়সের সন্তান অন্তর্ভুক্ত হবেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের অপব্যবহার রোধে নতুন এই নীতি ঘোষণার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ সমন্বিত পদক্ষেপ নিল। এর আগের পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি ছিল মার্কিন সরকারের বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যার ব্যবহার নিষিদ্ধ করে একটি নির্বাহী আদেশ জারি।

যেসব স্পাইওয়্যার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা বা বিদেশনীতির স্বার্থকে ঝুঁকিতে ফেলে, বাণিজ্য দপ্তরের তালিকাভুক্ত যেসব প্রতিষ্ঠান স্পাইওয়্যার তৈরি ও অত্যাধুনিক নজরদারি ব্যবস্থার অপব্যবহার করতে সক্ষম, সেসব বিষয় এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের বিস্তার ও অপব্যবহার রোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপরও এতে জোর দেওয়া হয়েছিল।