প্রতিযোগিতায় দৌড়াতে হয় স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে
স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে কাদা-পানি মাড়িয়ে, গাছের গুঁড়ি ডিঙিয়ে দৌড়াচ্ছেন একদল পুরুষ। যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যে একটি স্কি রিসোর্টে অদ্ভুত এই দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে গত শনিবার। ৩০ জনের বেশি প্রতিযোগী দৌড়ে অংশ নেন। প্রতিযোগিতার নাম ‘নর্থ আমেরিকান ওয়াইফ ক্যারিং চ্যাম্পিয়নশিপ’।
এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বিবাহিত হতেই হবে—এমনটা নয়। স্ত্রী হিসেবে যাঁকে কাঁধে নিয়ে দৌড়াবেন, তিনি বন্ধু হলেও কোনো সমস্যা নেই। গত শনিবারের দৌড়ে প্রতিযোগীদের ‘স্ত্রীকে’ কাঁধে নিয়ে কোমরসমান পানির ভেতর দিয়ে, থকথকে কাদা–পানি মাড়িয়ে এবং ফেলে রাখা গাছের গুঁড়ি ডিঙিয়ে ২৫৪ মিটার পথ দৌড়ে পাড়ি দিতে হয়েছে।
‘স্ত্রীকে’ কাঁধে নিয়ে দৌড়াতে গিয়ে কখনো কখনো মুখ থুবড়ে পড়ে যান কোনো কোনো প্রতিযোগী। তখন চারপাশ থেকে হাসির রোল ওঠে। করতালিতে ফেটে পড়েন সবাই। অন্যদিকে পড়ে যাওয়া প্রতিযোগী ‘স্ত্রীকে’ কাঁধে নিয়ে আবার ছুটতে শুরু করেন। প্রতিযোগী ও দর্শক—উভয়ের জন্য এই দৌড় দারুণ উপভোগ্যের ছিল।
অবশ্য এই প্রতিযোগিতার অতীত ইতিহাস খুব একটা সুখকর নয়। কথিত আছে, উনিশ শতকে ফিনল্যান্ডে এক ব্যক্তি ‘রনকাইনেন দ্য রবার’ (ডাকাত রনকাইনেন) নামে কুখ্যাত হয়েছিলেন। বলা হয়, রনকাইনেন ও তাঁর দল গ্রামে গ্রামে হামলা চালিয়ে ধনীদের সম্পদ লুট করত, আর মেয়েদের ধরে নিয়ে আসত। রনকাইনেনের দল মেয়েদের কাঁধে চাপিয়ে দৌড়ে পালাত। সেখান থেকেই ফিনল্যান্ডে স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
প্রতিযোগিতার বিজয়ী পুরস্কার হিসেবে স্ত্রীর সমান ওজনের বিয়ার পান। ওজন মাপার জন্য পাল্লার একদিকে ‘স্ত্রী’ বসেন, অন্যদিকে কেসভর্তি বিয়ার রাখা হয়।
প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিউইয়র্ক থেকে এসেছেন ওয়েড পোর্টারফিল্ড। তিনি বলেন, মজা পেতে প্রতিবছরই স্ত্রী সারা পোর্টারফিল্ডকে নিয়ে আসেন। জয়-পরাজয় নয়, আনন্দ পাওয়াই মুখ্য।