চীনের কাছে তথ্য বিক্রির সন্দেহে মার্কিন নৌবাহিনীর দুজন গ্রেপ্তার

মার্কিন নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ
প্রতীকী ছবি: এএফপি

চীনের কাছে গোপন তথ্য বিক্রির সন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন দুজন চীনের কাছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের ম্যানুয়াল, যুদ্ধজাহাজের অস্ত্র ও রাডার ব্যবস্থার খুঁটিনাটি, সামরিক মহড়ার পরিকল্পনার তথ্য বিক্রি করেছেন। এর বিনিয়মে তাঁরা হাজার হাজার ডলার পেয়েছেন।

সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের একজন জিনচাও উয়েই (২২)। মার্কিন বিচার বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সান দিয়েগোয় যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস এক্সেসে নাবিক হিসেবে কাজ করেছেন জিনচাও। তিনি ওই যুদ্ধজাহাজ এবং সেটির পরিচালনার সামগ্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কে বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও চীনের কাছে তুলে দিয়েছেন।

এ ছাড়া যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস এক্সেসের অস্ত্র ব্যবস্থার কারিগরি তথ্যের ম্যানুয়াল চীনের হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার ডলার নিয়েছেন জিনচাও, এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

আরেকজন সন্দেহভাজন হলেন ওয়েনহেং ঝাও (২৬)। লস অ্যাঞ্জেলসে মার্কিন নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে কর্মরত তিনি। সেখানে অবস্থান করে প্রায় দুই বছর ধরে চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় সামরিক মহড়ার গোপন তথ্য হস্তান্তরের বিনিময়ে চীনের গোয়েন্দাদের কাছ থেকে ১৫ হাজার ডলার নিয়েছেন ঝাও। এসব তথ্যের মধ্যে সামরিক মহড়ার সম্ভাব্য তারিখ ও স্থানের খবরও ছিল।

এ ছাড়া ঝাও জাপানের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটির রাডার–ব্যবস্থার ইলেকট্রিক ডায়াগ্রাম ও ব্লু প্রিন্ট চীনের কাছে তুলে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঝাওকে সর্বোচ্চ ২০ বছর কারাগারে কাটাতে হতে পারে।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইয়ের কাউন্টার ইন্টেলিজেনস বিভাগের কর্মকর্তা সুজান টার্নার বলেন, ‘এই গ্রেপ্তারের ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে আমাদের গণতন্ত্রকে দুর্বল করতে চীন নিরলসভাবে আক্রমণাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি যাঁরা গণতন্ত্র রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন, তাঁদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।’

সুজার টার্নারের মতে, চীনের হাতে চলে যাওয়া সংবেদনশীল এসব সামরিক তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর ঝুঁকির কারণ হতে পারে।