মামদানি উঠছেন ‘গ্রেসি ম্যানশনে’, কারণ পরিবারের নিরাপত্তা
নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি বলেছেন, জানুয়ারিতে শপথ গ্রহণের পর তিনি এবং তাঁর স্ত্রী মেয়রের সরকারি বাসভবন ‘গ্রেসি ম্যানশনে’ যেতে প্রস্তুত আছেন।
মামদানি বলেছেন, দুটি উদ্দেশ্য সামনে রেখে গ্রেসি ম্যানশনে যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত তাঁর। একটি হলো পরিবারের সুরক্ষা। আর দ্বিতীয়টি নিউইয়র্কবাসীর জন্য ‘সাশ্রয়ী জীবনযাপন কর্মসূচি’ বাস্তবায়নকাজে পুরোপুরি মনোনিবেশ করা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে মামদানি লেখেন, ‘আমার স্ত্রী রমা ও আমি জানুয়ারিতে গ্রেসি ম্যানশনে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ওই পোস্টে মামদানি অ্যাস্টোরিয়ার বর্তমান আবাসটি তাঁর কাছে কতটা বিশেষ, সে কথাও উল্লেখ করেছেন। মামদানি বলেছেন, এ এলাকার প্রভাব সব সময় তাঁর মধ্যে ও তাঁর কাজের মধ্যে জীবিত থাকবে।
মামদানি লেখেন, ‘আমরা সবকিছু মিস করব—কখনো শেষ না হওয়া এডেনি চা, স্প্যানিশ, আরবি এবং সেখানকার সব ভাষায় প্রাণবন্ত আলাপচারিতা, ব্লকের ভেতর থেকে ভেসে আসা সামুদ্রিক খাবার ও শর্মার ঘ্রাণ।’
নির্বাচনী প্রচারণার সময় মামদানি সাশ্রয়ী জীবনযাপন এবং আবাসন খাতে স্থিতিশীলতা আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং এর পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন। গত মাসে মেয়র নির্বাচনে তিনি বড় ব্যবধানে জয়ী হন।
শত বছরের বেশি সময়ের মধ্যে নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছেন মামদানি। তিনি নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র।
৩৪ বছর বয়সী মামদানি বর্তমানে একটি সরকারি ভর্তুকির বাড়িতে থাকেন। এ কারণে এই ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্টকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
অ্যাস্টোরিয়ায় এক শোবার ঘরের অ্যাপার্টমেন্টের জন্য মামদানি এখন মাসে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার ভাড়া দেন।
সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো এর তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, মামদানি বছরে প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার ডলার আয় করেন। তা সত্ত্বেও তিনি সরকারি ভর্তুকি থাকা ভাড়ানিয়ন্ত্রিত একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন।
মাত্র ৮০০ বর্গফুটের এই অ্যাপার্টমেন্টে ভাড়ার মধ্যে বাড়ি গরম রাখা এবং গরম পানি পাওয়ার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা নিউইয়র্ক সিটির আইনে বাড়িভাড়ার একটি শর্ত।
তবে অ্যাপার্টমেন্টে নিজস্ব ওয়াসার বা ড্রায়ার নেই। ভবনে একটি কমিউনাল লন্ড্রি রুম রয়েছে। ১৯২৯ সালে নির্মিত ওই ভবনে একটি লিফটও রয়েছে, যা অ্যাস্টোরিয়ায় বিরল বিষয়।
অন্যদিকে গ্রেসি ম্যানশনের বারান্দা থেকে ইস্ট রিভারের দৃশ্য দেখা যায়। এখানে একটি বিনোদনকক্ষ রয়েছে, যেখানে বড় ফায়ারপ্লেস আছে। এ ছাড়া একটি বসার ঘর ও একটি খাবার ঘর রয়েছে। আর রয়েছে একজন সার্বক্ষণিক রান্নার লোক।
অ্যাস্টোরিয়া একটি সাশ্রয়ী পাড়া, যেখানে তরুণ লোকজন ও পরিবার বসবাস করে। সেখানে আপার ইস্ট সাইডে বিশ্বের কয়েকটি বিখ্যাত জাদুঘর ও বার রয়েছে।
গ্রেসি ম্যানশনে নিরাপত্তার জন্য উঁচু বেড়া দেওয়া রয়েছে। বাইরে ক্যামেরা ও পুলিশ সদস্যও মোতায়েন করা আছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা ও সমাবেশস্থল থাকায় প্রায় সব মেয়র বসবাসের জন্য শেষ পর্যন্ত গ্রেসি ম্যানশনকে বেছে নেন।