কর্মীরা চাকরি ছাড়ছেন, কার্যালয় বন্ধ, টুইটার চালু থাকবে তো?

টুইটারের নতুন মালিক ইলন মাস্কের নানা ধরনের শর্ত না মেনে অনেক কর্মী ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন
ছবি: রয়টার্স

আরও একটি বড় ধাক্কা খেল টুইটার। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে আরেক  দফায় কর্মীরা টুইটার ছেড়ে দিয়েছেন। টুইটারের নতুন মালিক ইলন মাস্কের দীর্ঘ সময় অফিসে থাকার কঠিন শর্ত মানতে রাজি হননি তাঁরা। এমন পরিস্থিতিতে টুইটার কীভাবে চলবে তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন এর ব্যবহারকারীরা।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের তথ্য অনুযায়ী, টুইটার থেকে গুরুত্বপূর্ণ কর্মীরা চলে যাওয়ার পর থেকে বেশ কিছু ব্যবহারকারী টুইটার ব্যবহারে সমস্যার কথা বলছেন। ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষক সাইট ডাউন ডিটেক্টর বিষয়টি তুলে ধরেছে। এ সংক্রান্ত একটি চার্ট টুইটারে অনেকে শেয়ার করেছেন।

ইলন মাস্ক শর্ত দেন, যাঁরা টুইটারে কঠোর পরিশ্রমে রাজি থাকবেন তাঁরা এখানে থাকতে পারবেন। না হলে বৃহস্পতিবার ৫টার মধ্যে বিদায় জানিয়ে দিতে সময়সীমা বেঁধে দেন তিনি। কিন্তু মাস্কের শর্ত না মেনে অনেকেই টুইটারকে বিদায় জানানোর পথ বেছে নেন।

টুইটারের সাবেক কর্মীদের অনেকেই এখন আশঙ্কা করছেন, স্বল্পসংখ্যক কর্মী নিয়ে অনলাইনে চালু থাকতে সমস্যার মুখে পড়বে টুইটার।

তবে, এখন পর্যন্ত টুইটার বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ব্যবহারকারীদের উদ্বেগ সংক্রান্ত টুইট বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি চিহ্নিত করেছে ডাউন ডিটেক্টর। এ নিয়ে টুইটার ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তিও ছড়িয়েছে।

ইলন মাস্ক এর আগে শর্ত দেন যাঁরা টুইটারে কঠোর পরিশ্রমে রাজি থাকবেন তাঁরা এখানে থাকতে পারবেন। না হলে বৃহস্পতিবার ৫টার মধ্যে বিদায় জানিয়ে দিতে সময়সীমা বেঁধে দেন তিনি। কিন্তু মাস্কের শর্ত না মেনে অনেকেই টুইটারকে বিদায় জানানোর পথ বেছে নেন।

এ পরিস্থিতি নিয়েও মস্করা করতে ভোলেননি মাস্ক। তিনি বিদ্রূপ করে মিম পোস্ট করেন। পরে পৃথক টুইটে বলেন, টুইটারে সেরা কর্মীরা থেকে যাচ্ছেন। তাই এ নিয়ে তিনি খুব বেশি উদ্বিগ্ন নন।

টুইটারের সাবেক একজন কর্মকর্তা এটিকে ‘গণ প্রস্থান’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সম্প্রতি টুইটার ছেড়ে যাওয়া এই কর্মী বলেন, ‘টুইটার কার্যালয়ে বাতি জ্বালাতেও সংগ্রাম করতে হবে।’ গত মাসে ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কেনার পর মাস্ক টুইটারের প্রায় অর্ধেক কর্মী (৩ হাজার ৭০০) ছাঁটাই করেছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার আবার অনেক কর্মী গণ প্রস্থান করেছেন।

মানুষ যখন বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার সকালে এ খবর জানতে পারে তখন অনেকে ভেবে বসেন, টুইটারের দিন শেষ। কেউ কেউ টুইটারে তাঁর শেষ টুইট ভেবে টুইট করতে শুরু করেন। টুইটার থেকে কর্মী ছেড়ে যাওয়ার এ খবরে অনেকে টুইটার বন্ধ হয়ে গেছে কি না তা দেখতে সাইটে ঢোকেন। কেউ কেউ টুইটারে তাঁদের অনুসারীদের শেষ টুইট করে অন্য প্ল্যাটফর্মে তাঁদের অনুসরণ করার লিংক পোস্ট করেন। টুইটারে ‘রিআইপি টুইটার’ ট্রেন্ড চালু হয়।

এই পরিস্থিতি নিয়েও মস্করা করতে ভোলেননি মাস্ক। তিনি এ নিয়ে বিদ্রূপ করে মিম পোস্ট করেন। পরে পৃথক টুইটে বলেন, টুইটারে সেরা কর্মীরা থেকে যাচ্ছেন। তাই এ নিয়ে তিনি খুব বেশি উদ্বিগ্ন নন।

তবে টুইটার ব্যবহারকারীরা সম্প্রতি এ প্ল্যাটফর্মে কিছু কারিগরি সমস্যার মুখে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন। এ সমস্যার মধ্যে রয়েছে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন। বৃহস্পতিবার এ সমস্যা দেখা যায়। শুক্রবারও টুইটার থেকে তথ্য ডাউনলোড করে নেওয়ার সময় কারিগরি সমস্যার মুখে পড়েন ব্যবহারকারীরা, এমন অভিযোগ আসতে শুরু করে।

টুইটারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে তাঁদের জনসংযোগ বিভাগের অধিকাংশ কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি টুইটার।

শুক্রবার সকাল পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ১১টা পর্যন্ত) টুইটার চালু থাকতে দেখা গেছে। এতে তখন পর্যন্ত তেমন সমস্যা দেখা যায়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার টুইটারের প্রকৌশল, অর্থ, নিরাপত্তা ও ব্যবসা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কর্মীরা চলে যাওয়ার পর টুইটার তার সেবা চালিয়ে যেতে পারবে কি না সে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক কর্মীরা। এমন এক মুহূর্তে টুইটারের জন্য এ খবর এসেছে যখন ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে। সাধারণত এ সময়টাতে টুইটারের ব্যস্ত সময় যায়।