৮০ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ডুবে যাওয়া মার্কিন সাবমেরিনের খোঁজ

ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলের লুজন দ্বীপের কাছে তিন হাজার ফুট সমুদ্রের গভীরে ইউএসএস হারডারের খোঁজ পাওয়া গেছেছবি: যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সৌজন্যে

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দক্ষিণ চীন সাগরে শত্রুসেনাদের ডুবিয়ে দেওয়া মার্কিন নৌবাহিনীর সাবমেরিন ইউএসএস হারডারের খোঁজ পাওয়া গেছে। মার্কিন এই সাবমেরিন জাপানের অধিকাংশ যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে দিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। ৮০ বছর পর ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলের লুজন দ্বীপের কাছে তিন হাজার ফুট সমুদ্রের গভীরে এর খোঁজ পাওয়া গেছে। এটি ‘লস্ট ৫২’ নামের একটি মার্কিন প্রকল্পের আওতায় খুঁজে পাওয়া গেছে। এ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের হারানো ৫২টি সাবমেরিন খোঁজা হচ্ছে।

মার্কিন নৌবাহিনীর হিস্ট্রি অ্যান্ড হেরিটেজ কমান্ডের (এনএইচএইচসি) তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন এই সাবমেরিন ১৯৪৪ সালের ২৯ আগস্ট যুদ্ধের সময় ৭৯ জন ক্রুসহ ডুবে যায়। এটি ডুবে যাওয়ার আগে তিনটি জাপানি যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে দেয়। এ ছাড়া অন্য দুটি জাহাজের ব্যাপক ক্ষতি করে।

এই সাবমেরিনের কারণে জাপানকে তাদের যুদ্ধের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে হয় ও যুদ্ধজাহাজ ছাড়তে দেরি হয়। এটি জাপানের পরাজয়েও ভূমিকা রাখে।

অক্ষত অবস্থায় ইউএসএস হারডার
ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সৌজন্যে

এনএইচএইচসির প্রধান অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন অ্যাডমিরাল স্যামুয়েল জে কক্স বলেন, ‘জয়ের পথে থাকা অবস্থায় হারডারকে হারাতে হয়। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে প্রতিটি বিজয়ের বা স্বাধীনতার একটা মূল্য আছে।’

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফিলিপাইন ছিল প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র। জাপানের সেনাদের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সাবেক এ উপনিবেশ ফিরিয়ে নিতে লড়াই করছিল। ফিলিপাইনের আশপাশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার অনেক যুদ্ধজাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন বিলিয়নিয়ার পল অ্যালেন ২০১৫ সালে ফিলিপাইনের সিবুয়ান সাগরে জাপানের সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজের একটি মুসাসির সন্ধান পান।

হারডার নামের এই সাবমেরিনের লক্ষ্য ছিল শত্রু জাহাজকে কঠিন আঘাত করা। মার্কিন নৌবাহিনী বলছে, সাবমেরিনটিকে পাটাতনের ওপর সোজা বসা অবস্থায় তুলনামূলকভাবে অক্ষত পাওয়া গেছে। পরে এই সাবমেরিন ও এর ক্রুদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভূমিকা রাখায় প্রেসিডেনশিয়াল ইউনিট সাইটেশন পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এ সম্মান অসামান্য নায়কোচিত কার্যক্রমের জন্য দেওয়া হয়। এর কমান্ডার স্যাম ডিলেকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সামরিক পুরস্কার মেডেল অব অনার দেওয়া হয়।