অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য বিষয়ক দপ্তরের ৮০ হাজারের বেশি কর্মীকে ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যবিষয়ক দপ্তরের ৮০ হাজারের বেশি কর্মীকে ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। রয়টার্সের হাতে আসা দপ্তরটির একটি অভ্যন্তরীণ নোট (মেমো) থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এমন উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্য ও ডেমোক্র্যাটরা।
দপ্তরের চিফ অব স্টাফ ক্রিস্টোফার সায়রেক গত মঙ্গলবার দপ্তরটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের দাপ্তরিক ওই মেমো পাঠিয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো দপ্তরের কর্মীর সংখ্যা ২০১৯ সালের সময়কার মতো চার লাখের নিচে নামিয়ে আনা। এর অর্থ হলো, প্রায় ৮২ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করা হবে।
দপ্তরের কর্মীদের কর্মী ছাঁটাইয়ে ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির সঙ্গে একযোগে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এর লক্ষ্য দুটি—অপচয় দূর করা ও কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানো।
যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যবিষয়ক মন্ত্রী ডগ কলিন্স এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এখন যাঁরা চাকরি হারাচ্ছেন, তাঁদের জন্য আমরা দুঃখিত। বিশেষত ভেটেরানদের একজন নেতা ও আপনাদের মন্ত্রী হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার জন্য ভীষণ কঠিন কাজ। কিন্তু ফেডারেল সরকার মানুষকে কাজ দেওয়ার জন্য নয়; বরং মানুষের সেবায় নিয়োজিত।’
ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অহেতুক ভুগবেন, এমনটাই মন্তব্য করেন এভারেট কেলি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মীদের ফেডারেশনের প্রধান। এই সংগঠনের আওতায় ৩ লাখ ১১ হাজার প্রবীণ কর্মী রয়েছেন।
মার্কিন সিনেটের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য বিষয়ক কমিটির রিপাবলিকান চেয়ারম্যান জেরি মোরান ইঙ্গিত দিয়েছেন, ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন নিয়ে তিনি পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন। এ জন্য তিনি এই দপ্তরকে মার্কিন কংগ্রেসের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ‘প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো’ নিয়ে আইন প্রণয়ন করা যায়।
ই-মেইলে পাঠানো এক বিবৃতিতে জেরি মোরান বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য বিষয়ক দপ্তরে সংস্কার আনা প্রয়োজন। কিন্তু বিভাগটির আকার কমিয়ে আনা ও দক্ষতা বৃদ্ধির বর্তমান প্রচেষ্টা আরও দায়িত্বশীলভাবে করা উচিত।
সিনেটের এই কমিটির জ্যেষ্ঠ ডেমোক্র্যাট রিচার্ড ব্লুমেন্থাল এক বিবৃতিতে সমালোচনা করে বলেন, ‘কর্মী ছাঁটাইয়ের এই উদ্যোগ প্রবীণবিষয়ক দপ্তরের বেসরকারীকরণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া। এটা খুবই লজ্জাজনক বিশ্বাসঘাতকতা।’
প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ট্রাম্প ২০১৮ সালে একটি আইনে সই করেছিলেন। ওই আইনে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য বিষয়ক দপ্তরের মাধ্যমে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবায় সদস্যদের প্রবেশাধিকার বাড়ানো হয়েছিল।